physical properties of metal - Definition of Mechanical Properties of Metal
physical properties of metal - Definition of Mechanical Properties of Metal
physical properties of metal - Definition of Mechanical Properties of Metal
ধাতুর গুণাবলি (Properties of Metal)
ধাতুর গুণাবলি ওয়েল্ডিং এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ধাতু মাত্রই একাধিক ভিন্নধর্মী গুণাগুণ সম্পন্ন হয়ে থাকে। কোন ধাতুটি কোন কাজের উপযোগী তা এর গুণাগুণ বিচার করে সহজেই এর ব্যবহারিক ক্ষেত্র নির্ধারণ করা যায়। এসব গুণাবলির মধ্যে ভৌত, যান্ত্রিক ও রাসায়নিক গুণাবলি অন্যতম। একজন দক্ষ ওয়েল্ডারের এ গুণাবলি জানা থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন।ধাতুর ভৌত গুণাবলি (Physical Properties of Metal )
সাধারণত ধাতুর বাহ্যিক যে গুণাগুণ প্রকাশ পায় তাই ঐ ধাতুর ভৌত গুণাগুণ। ধাতুর কিছু ভৌত গুণাগুণ নিচে দেওয়া হল-• তাপ পরিবাহিতা (Thermal Conductivity) : ধাতুর মধ্যদিয়ে তাপ পরিবহন করার ধর্মকে তাপ পরিবাহিতা বলে। তামা, এ্যালুমিনিয়ামের তাপ পরিবাহিতা ক্ষমতা অত্যধিক। আবার কাঠ, কর্কের তাপ পরিবহন ক্ষমতা খুবই কম।
• ঘনত্ব (Density) : বস্তুর একক আয়তনে পদার্থের পরিমাণকে ঐ ধাতুর ঘনত্ব বলে।
• গলন তাপমাত্রা (Melting Temperature) : গলন তাপমাত্রা হলো সেই তাপমাত্রা যে তাপমাত্রায় কোন বস্তু গলতে শুরু করে।
• চুম্বকত্ব (Magnetism) : কোনো বস্তু চুম্বক দ্বারা আকৃষ্ট হয় কিনা তা দ্বারা জানা যায় বস্তুটি চৌম্বক পদার্থ না অচৌম্বক পদার্থ ।
• বর্ণ (Color) : অনেক ক্ষেত্রে ধাতুর বাহ্যিক রং দেখে চিহ্নিত করা যায়। যেমন এ্যালুমিনিয়াম নীলাভ সাদা বর্ণের, পিতল উজ্জ্বল হলুদাভ এবং তামা তামাটে রংঙের।
physical properties of metal - Definition of Mechanical Properties of Metal
ধাতুর রাসায়নিক গুণাবলি (Definition of Chamical Properties of Metal)
কোন পরিবেশে কোন ধাতু দক্ষতার সাথে টিকে থাকতে পারবে তা জানা যায় এর রাসায়নিক গুণাবলি থেকে । নিম্নে ধাতুর কয়েকটি রাসায়নিক গুণাবলি উল্লেখ করা হলো-• করোসন (Corrosion) : কোন বস্তুর আবহাওয়াজনিত ক্ষয় হলো করোসন।
• অক্সিডেশন (Oxidation) : অক্সিজেনের কারণে সংঘটিত করোসনকে বলা হয় অক্সিডেশন। এর ফলে ধাতব বস্তুর উপর প্রলেপ সৃষ্টি হয়।
• PH : ধাতুর PH এর মাত্রা থেকে জানা যায় বস্তুটি আবহাওয়া এবং জলীয়বাষ্পের আক্রমণ কতটা প্রতিহত করতে পারবে। এর ফলে কোন পরিবেশে কোন ধরনের ধাতুর অবকাঠামো তৈরি করতে হবে তা সহজে অনুমান করা যায়।
ধাতুর যান্ত্রিক গুণাবলি (Definition of Mechanical Properties of Metal)
ধাতুর উপর বাহ্যিক বল প্রয়োগজনিত কারণে প্রদর্শিত গুণাবলিকে ধাতুর যান্ত্রিক গুণাবলি বলে।ওয়েল্ডিং এর সাথে সম্পর্কযুক্ত যান্ত্রিক গুণাবলির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা (Properties of Metal Related with Welding)
স্ট্রেস (Stress) :
বস্তুর অভ্যন্তরস্থ যে বলের দ্বারা বাহিরের প্রয়োগকৃত বলকে বাধা দান করে তাই স্ট্রেস।
স্ট্রেইন (Strain) :
বল প্রয়োগের ফলে বস্তুর স্থায়ী বিকৃতিকে স্ট্রেইন বলে।
স্ট্রেংথ (Strength)
বস্তু যে ক্ষমতার দ্বারা প্রয়োগকৃত বল প্রতিরোধ কিংবা ভার বহন করতে সক্ষম হয় তাকে স্ট্রেংথ বলে।
টেনসাইল স্ট্রেস (Tensile stress) :
ধাতুর যে গুণ দ্বারা এর উপর প্রয়োগকৃত টানাবল প্রতিরোধ করে তাকে টেনসাইল স্ট্রেস বলে।
শিয়ার স্ট্রেস (Shear Stress) :
দুটি সমপরিমাণ বল সমান্তরাল ক্রিয়া রেখা বরাবর একটি অন্যটির বিপরীতে যখন টানা হয় তখন বস্তুর পার্শ্ববর্তী অংশসমূহ তুলনামূলকভাবে সমান্তরাল রেখায় স্থানচ্যুত হতে চায়, এ অবস্থাকে শিয়ার এবং তাতে সৃষ্ট স্ট্রেসকে শিয়ার স্ট্রেস বলে।
কমপ্রেসিভ স্ট্রেস (Compressive Stress)
চাপা অবস্থায় বস্তু তার অভ্যন্তরস্থ যে বল দ্বারা বাহিরের প্রয়োগকৃত বলকে বাধা দান করে তাই চাপাবল বা কমপ্রেসিভ স্ট্রেস।নমনীয়তা (Ductility) :
যে গুণের জন্য ধাতুকে না ভেঙ্গে বা না ফাটিয়ে বাঁকানো কিংবা মোচড়ানো যায়।
কাঠিন্যতা (Hardness)
এটি ধাতুর এক প্রকার ঋণ যা ধাতুর ভিতরে অন্য বন্ধর অনুপ্রবেশে বাধা দান করে।
ভঙ্গুরতা (Brittleness) :
এই গুণের জন্য কোন ধাতুকে আঘাত করলে তা খণ্ড বিখণ্ড হয়ে ভেঙ্গে যায়। যেমন- কাঁচ
ইলংগেশন (Elongation) :
যন্ত্র ভেঙ্গে যাওয়ার পূর্বে কতটা লম্বা হবে তা যারা ইংগেশন পরিমাপ করা যায়। টেস্টের সময় ইলংগেশন শতকরা হারে মাপা হয়।
টাকনেস (Toughness) :
ধাতুর যে গুণের দ্বারা তা বারংবার বাঁকানো কিংবা মোচড়ানোর প্রতিক্রিয়া সহ্য করতে সক্ষম।
মোচড়ানো পীড়ন (Torsional Stress) :
যদি কোন গোলাকার বন্ধর উপর ঘুর্ণন বা প্রয়োগ করা হয় তাহলে বস্তুটি মোচড় খেতে চায়। কিন্তু বছর অভ্যন্তরে বাধাপ্রদান করার জন্য যে মোচড়ানো বলের সৃষ্টি হয় তাকে মোচড়ানো পীড়ন বলে ।
স্থিতিস্থাপকতা (Elasticity) :
কোন বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করার ফলে বস্তুটির বিকৃতি ঘটে আবার এই বল সরিয়ে ফেললে বস্তুটি তার পুর্বের অবস্থার ফিরে আসে। যে ধর্মের কারণে বন্ধু পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে তাকে স্থিতিস্থাপকতা বলে।
সমানুপাতিক সীমা (Proportional Limit):
প্রযুক্ত বলের পরিমাণ যে সীমা অতিক্রম করলে প্রযুক্ত বলের অনুপাতে বিকৃতি অধিক হয় অর্থাৎ যে সীমার বাইরে ছকের নিয়ম কার্যকরী হয় না তাকে সমানুপাতিক সীমা বলে।স্থিতিস্থাপকতা সীমা (Elastic Limit)
প্রযুক্ত বলের যে সীমা পর্যন্ত বস্তুর উপর হতে প্রযুক্ত বল অপসারণ করলেও বস্তুটি পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে তাকে স্থিতিস্থাপক সীমা বলে।
ইরেও বিন্দু (Yield Point) :
প্রযুক্ত বলের যে সীমা অতিক্রম করলে প্রযুক্ত বলের সামান্যতম বৃদ্ধিতে বস্তুটির অধিক পরিমাণ বিকৃতি ঘটে তাকে ইন্ড বিন্দু বলে।
ফ্যাটিক (Fatigue) :
একটি বস্তুর উপর প্রযুক্ত বলের যে পরিমাণ বলে বস্তুটি ছিড়ে যায় না ভেঙ্গে যায় তার চেয়ে অনেক কম বলে ভেঙ্গে যেতে পারে, যদি প্রযুক্ত বলটি একাধিকক্রমে বা পুনঃপুন প্রয়োগ করা হয় এ ক্ষেত্রে এই অল্প প্রযুক্ত বলেই বস্তুটি ভেঙ্গে যাওয়াকে বস্তুর ফ্যাটিক ব্যর্থতা বলে।
মেশিনিবিলিটি (Machinability) :
এটি ধাতব পদার্থের একটি প্রয়োজনীয় গুণ যার জন্য এটাকে সহজে মেশিনে কাঁটা যায়।
টেনার্সিটি (Tenacity):
টেনে লম্বা বা ছিন্ন করার প্রচেষ্টাকে বাধা দেবার যে ক্ষমতা ধাতুর রয়েছে তাকে টেনার্সিটি বা টানা সাম্য বলে।
প্রি-হিটিং এবং পোস্ট-হিটিং (Pre-heating & Post heating)
সম্পূর্ণ ধাতু গুগুলোকে সুষমভাবে গরম করে ওয়েল্ডিং করলে ফাটলের সৃষ্টি হয় না। ফলে ধাতুর বিকৃতি রোধ হয়। প্রি-হিটিং হলো ওয়েল্ডিং শুরু করার পূর্বে মূল ধাতুতে তাপ প্ররোগের একটি কৌশল। আর পোষ্ট হিটিং হলো ওয়েল্ডিং-এর পর ধাতুর তাপ প্রক্রিয়া যার সাহায্যে ওয়েন্ডিং এর সৃষ্ট স্ট্রেস দূর করা হয়। তাই একজন দক্ষ ওয়েল্ডারের প্রি-হিটিং ও পোস্ট হিটিং কৌশল, প্রয়োগ পদ্ধতি সম্পর্কে জানা এবং অনুসরণ করা আবশ্যক।প্রি-হিটিং এর কার্যকারিতা নিম্নে দেওয়া হলো-
• কোল্ড জ্যাক প্রতিরোধ করে
• হিট অ্যাফেকটেড জোনের হার্ডনেস কমায়
• রিসিডিউর্যাল স্ট্রেস কমায়
• বিকৃতি কমায়।
বিভিন্ন ধাতুর প্রি-হিটিং উত্তাপ শনাক্তকরণ (Pre-heating temperature of different Metal)
প্রি-হিটিং এর জন্য সঠিক তাপমাত্রা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়। কার্বনের উপর নির্ভর করে মাইল্ড স্টীলের প্রি-হিটিং তাপমাত্রা ২০০ হতে ৭০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৯৪ হতে ৩৭০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) হওয়া উচিত। কার্বনের পরিমাণ যত বেশি হবে প্রি-হিটিং তাপমাত্রাও তত বেশি হবে। প্রি-হিটিং তাপমাত্রা বিভিন্ন উপায়ে নির্ণয় করা যেতে পারে। এখানে কতকগুলো পদ্ধতি প্রদত্ত হল-
• সারফেস পাইরোমিটারস্ দ্বারা
• পৃষ্ঠদেশে কাঠমিস্ত্রির ব্লু-চকের দাগ দিয়ে। তাপমাত্রা প্রায় ৬২৫ ডিগ্রী ফাঃ (৩৩০ ডিগ্রী সে.) পৌঁছলে এ চকের দাগ সাদাটে ধূসর রং এ পরিবর্তিত হয়।
• ৫০/৫০ সোল্ডার পৃষ্ঠদেশে ঘষার মাধ্যমে। ৩৬০ ডিগ্রী ফাঃ (১৮২ ডিগ্রী সে.) তাপমাত্রায় সোল্ডার গলতে আরম্ভ করে।
• পাইন কাঠের কাঠি উত্তপ্ত স্থানে ঘষে। পাইন প্রায় ৬৩৫ ডিগ্রী ফাঃ এ (৩৩৫ ডিগ্রী সে.) পুড়ে অঙ্গার হয়।
পোস্ট হিটিং-এর কার্যকারতা নিম্নে প্রদত্ত হলো-
১/ স্ট্রেস রিলিফ করে
২/ ফাটল প্রতিরোধ করে
৩/ বিকৃতি দমন করে
পীড়ন (Stress)
বস্তুর উপর বাহ্যিক বল প্রয়োগ করলে নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্রানুসারে বস্তুর মধ্যে প্রতিক্রিয়া বলের সৃষ্টি হয়। এই প্রতিক্রিয়া বলের মান প্রযুক্ত বলের সমান ও বিপরীত মূখী। অতএব কোন একটি বস্তুর একক ক্ষেত্রফলের উপর প্রতিক্রিয়ামূলক বলের মানকে পীড়ন বলে। আরও সহজ ভাবে বলা যায় যে, কোন একটি বস্তুর একক ক্ষেত্রফলের উপর প্রযুক্ত বলকে পীড়ন বলে ।কোন একটি বস্তুর ক্ষেত্রফল = A এবং প্রযুক্ত বল = F - পীড়ন = F
বল - ক্ষেত্রফল = f-a
পীড়ন তিন প্রকার যথা-
১. দৈর্ঘ্য পীড়ন
২. আকার বা মোচড় পীড়ন
৩. আয়তন পীড়ন
দৈর্ঘ্য পীড়ন : দৈর্ঘ্য বিকৃতি ঘটাবার জন্য প্রতি একক ক্ষেত্র ফলের উপর দৈর্ঘ্য বরাবর প্রযুক্ত বলকে দৈর্ঘ্য পীড়ন বলে।
কোন একটি তারের প্রস্থছেদের ক্ষেত্রফল = A এবং বল = F F
-: দৈর্ঘ্য পীড়ন f ক্ষেত্রফল A
আকার বা মোচড় পীড়ন :
আকার বিকৃতি ঘটাবার জন্য যে পীড়ন প্রয়োগ করা হয় তাকে আকার বা মোচড় পীড়ন বলে । যদি কোন একটি বস্তুর A ক্ষেত্রফলের উপর স্পর্শক বল F প্রয়োগ করে আকার বিকৃতি ঘটানো হয় তবে, আকার পীড়ন F Aআয়তন পীড়ন :
আয়তন বিকৃতি ঘটানোর জন্য যে পীড়ন প্রয়োগ করা হয় তাকে আয়তন পীড়ন বলে। কোন একটি বস্তুর চারদিক থেকে F পরিমাণ বল লম্বভাবে পয়োগ করে আয়তন বিকৃতি ঘটানো হয়েছে। যদি তলের ক্ষেত্রফল A হয়, তবে আয়তন পীড়ন f
পীড়ন ও বিকৃতির মধ্যে সম্পর্ক
পীড়ন ও বিকৃতির মধ্যে একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে বস্তুর উপর প্রযুক্ত পীড়ন তার দ্বারা সৃষ্ট বিকৃতির সমানুপাতিক। ১৬৭৮ খ্রিষ্টাব্দে বিখ্যাত ব্রিটিশ বিজ্ঞানী রবার্ট হুক (Robert Hooke) সর্বপ্রথম নির্ণয় করেন বলে তাঁর নাম অনুসারে একে 'হুকের সূত্র' বলা হয়। এ সূত্রমতে স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে কোন পদার্থের পীড়ন, এর বিকৃতির সমানুপাতিক ।গাণিতিকভাবে, পীড়ন a. বিকৃতি অর্থাৎ
= ধ্রুব বা = Constant. [এটাই পীড়ন ও বিকৃতির মধ্যে সম্পর্ক]
হিটট্রিটমেন্ট (Heat Treatment) বা তাপ প্রক্রিয়া ধাতু বা ধাতব সংকরকে বিশেষ তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করার পর ধীরে ধীরে অথবা দ্রুত ঠান্ডা করার মাধ্যমে তাতে কাঙ্ক্ষিত গাঠনিক পরিবর্তন, যান্ত্রিক গুণাগুণ এবং ভৌত গুণাগুণ অর্জনের পদ্ধতি হলো তাপ প্রক্রিয়া বা হিটট্রিটমেন্ট।
তাপ প্রক্রিয়ার ফলে ইস্পাতে কাটার যোগ্যতা ও ক্ষয়রোধ শক্তি বৃদ্ধি পায়। আবার সহজে মেশিনিং কার্য সমাধানের জন্য নরমও করা যায়। সঠিক তাপ প্রক্রিয়ার ফলে ধাতুর অভ্যন্তরীণ পীড়ন দূর হয়। দানার আকৃতি কমে এবং দুরচ্ছেদ্যতা বৃদ্ধিপায়। তাপ প্রক্রিয়ায় পদার্থের কঠিন পৃষ্ঠতলে অভ্যন্তর ভাগ তান্ডবতা গুণ সম্পন্ন হয়। ইস্পাতের উপাদান সমূহের বিশ্লেষণ এই বিষয়ের শিক্ষার্থীদের জানা আবশ্যক। কেননা তাতে মিশ্রিত যে কোন উপাদানের সামান্যতম অংশ ভৌতিক গুণাবলীর উপর যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে। এই ক্ষেত্রে কার্বনের উদাহরণ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
তাপ প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তা
সাধারণত ধাতু বা সংকরের প্রয়োজনীয় গুণাবলী থাকে না এসব গুণাবলী অর্জনের জন্য তাপপ্রক্রিয়ার প্রয়োজন হয়। এছাড়াও ঢালাই ও ওয়েল্ডিং করার ফলে ধাতু ও ধাতব সংকরের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার ত্রুটি সৃষ্টি হয়। এই ত্রুটিসমূহ মুক্ত করতে হলে হিটট্রিটমেন্টের প্রয়োজন পড়ে। যেমন- শক্ত ধাতুকে নরম করা, গাঠনিক পরিবর্তন করে সম প্রকৃতি করা, কাঠিন্য বৃদ্ধি করা, উপরিভাগ শক্ত করা, যান্ত্রিক গুণাগুণ বৃদ্ধি করা ও ভঙ্গুরতা হ্রাস করার জন্য তাপ প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হয়। তাপ প্রক্রিয়া ধাতব বিজ্ঞানে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষনীয় বিষয়।তাপ প্রক্রিয়ার উল্লেখযোগ্য কাজ সমূহ
তাপপ্রক্রিয়ায় সাধারণত চারটি কাজ করতে হয় যথা-এ্যানিলিং
নরমালাইজিং
• কুয়েঞ্চিং
• টেম্পারিং
এ্যানিশিং প্রক্রিয়া (Annealing Process)
ধাতুকে নরম করার প্রক্রিয়াকেই এ্যানিলিং (Annealing) বলে। গাঠনিক পরিবর্তন সীমা ( অর্থাৎ উর্ধ্ব ক্রিটিক্যাল তাপমাত্রায় ৫০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড ঊর্ধ্ব) পর্যন্ত ধাতুকে উত্তপ্ত করে শুকনো বালির মধ্যে রেখে অথবা চুল্লির মধ্যে রেখে ধীরে ধীরে ঠান্ডা করাকে এ্যানিলিং বলে। ঠান্ডা অবস্থায় রোল করা, কাঁটা, পেটা বা অন্য যে কোন অপারেশনের ফলে ধাতু কিছুটা শক্ত হতে পারে। ধাতুর এই হার্ডনেস বা কাঠিন্যতা দূর করতেও এ্যানিলিং করা হয়। এই পদ্ধতিতে ধাতুর সকল স্থানে সমান তাপ প্রয়োগ করতে হয় এবং একই তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রেখে ধীরে ধীরে ঠান্ডা করতে হয়। এই একই তাপমাত্রায় কিছুক্ষণ রাখাকে সোকিং (Soaking) বলে।এ্যানিলিং এর প্রয়োজনীয়তা (Necessity of Annealing)
তাপ প্রক্রিয়ায় এ্যানিলিং এর গুরুত্ব অপরিসীম। সাধারণত নিম্নলিখিত কারণে এ্যানিলিং করা হয়ে থাকে- ধাতুকে কাজের উপযোগী নরম (Soft) করা।• ধাতুর অভ্যন্তরীণ পীড়ন (Internal stress) অপসারণ।
• তান্ডবতা, ভঙ্গুরতা, বৈদ্যুতিক চুম্বকীয় ও যান্ত্রিক গুণাগুণের পরিবর্তন করা। দানার সূক্ষ্মতা (Grain Refinement) বৃদ্ধি করা।
নির্দিষ্ট মাইক্রোস্ট্রাকচার সৃষ্টি করা।
• স্টিলকে পরবর্তী প্রক্রিয়ার জন্য প্রস্তুত করা।
এ্যানিলিং এর ফলাফল (Effect of Annealing)
স্টিলে এ্যানিলিং তাপপ্রক্রিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ কোল্ড রোলিং, ষ্ট্যাম্পিং প্রভৃতি কার্যে ফটিকের কাঠামো ভেঙ্গে যায়। ফলে স্টিলের তান্ডবতা হ্রাস পায়, শক্ততা বৃদ্ধি, এবং আঘাত প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। এ্যানিলি এর ফলে পুনকেলাসন হয় এবং ঐ সমস্ত যান্ত্রিক গুণাগুণ পুনরুদ্ধার হয়। এ্যানিলিং এর পূর্বে এবং পরে স্টিলের গুণাগুণ এর তুলনামূলক বিবরণ দেয়া হল।নরমালাইজিং (Normalizing)
স্টিলকে ঊর্ধ্ব ক্রিটিক্যাল তাপমাত্রায় এর উপরে ৫০ হতে ১০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করে, উক্ত তাপমাত্রায় কিছু সময় রেখে চুল্লীর বাইরে মুক্ত বায়ুতে শীতল করাকে নরমালাইজিং (Normalizing) বলে। নরমালাইজিং কথার অর্থ হল ধাতুকে নরমাল করা বা সাধারণ এবং সুষম অবস্থায় আনা। স্টিলকে হার্ডেনিং এর আগে নরমালাইজ করে নিতে হয়। নরমালাইজিং এর তাপমাত্রা স্টিলের মধ্যে কার্বনের পরিমাণের উপর নির্ভর করে। নরমালাইজিং এর প্রয়োগ এবং এর ফলাফলক. নরমালাইজিং করার ফলে রোলিং (Rolling), ফোর্জিং (Forging), ষ্ট্যাম্পিং (Stamping) প্রভৃতি কার্যের জন্য স্টিলে যে মোটা গ্রেনের সৃষ্টি হয় এটা অনেকাংশে সূক্ষ্ম হয়। মিডিয়াম কার্বন স্টিলের শক্তি বৃদ্ধি পায়, লো কার্বন স্টিলে মেশিনিবিলিটি বাড়ে, ওয়েল্ড এর গাঠনিক পরিবর্তন হয় ও অভ্যন্তরীণ পীড়ন (Internal Stress) হ্রাস পায়।
খ. যে সমস্ত যন্ত্রাংশ উচ্চ পীড়নে (Stress) ব্যবহৃত হয়, সেই সমস্ত স্টিলের যন্ত্রাংশে চূড়ান্ত তাপপ্রক্রিয়া হিসাবে নরমালাইজিং করা হয়।