স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বলতে কি বুঝায় - পিপিই ব্যবহারের নিয়ম - occupational hazard

 স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বলতে কি বুঝায় - পিপিই ব্যবহারের নিয়ম - occupational hazard
স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বলতে কি বুঝায় - পিপিই ব্যবহারের নিয়ম - occupational hazard

স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বলতে কি বুঝায় - পিপিই ব্যবহারের নিয়ম - occupational hazard

পেশাগত নিরাপত্তা (Occupational Safety)

 অকুপেশনাল সেফটি বা পেশাগত নিরাপত্তা বলতে আমরা যে কোনো প্রকার প্রতিকূল অবস্থাকে প্রতিরোধের মাধ্যমে নিরাপদে কাজ করাকে বুঝি। পেশাগত নিরাপত্তা তিন প্রকার, যথা-

ব্যক্তিগত নিরাপত্তা
দূর্ঘটনার হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য যে সকল সাবধানতা মেনে চলা হয়, তাই ব্যক্তিগত নিরাপত্তা । শিল্প-কারখানার কর্মীগণ ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরগ্রাম ব্যবহার করে থাকে। কর্মস্থলে কার্যাবস্থায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি হতে কর্মীকে বাঁচানোর জন্য যে সমস্ত সাজ সরঞ্জাম ও পোষাক পরিচ্ছদ ব্যবহার করা হয়, সেগুলোকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জাম বা পিপিই বলে। একজন ব্যক্তির কোনো অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে সম্ভাব্য ক্ষতি বা দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করা হবে তার উপর ভিত্তি করে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জাম (পিপিই) কে নিম্নবর্ণিত ভাবে ভাগ করা যায়-

স্বর্ণমণ্ডল ও চোখের সুরক্ষা সরঞ্জাম

দুলাবালি, ছিটকে আসা বিভিন্ন কঠিন পদার্থের কণা ও রাসায়নিক পদার্থ, ক্যাটালিস্ট পাউডার, গ্যাস, বাম্প, আর্ক ও গ্যাস ওয়েন্ডিং হতে নির্গত ক্ষতিকর রশ্মি, রেডিয়েশন, ইনফেকশন ইত্যাদি থেকে চোখকে নিরাপদ রাখার জন্য সেফটি গণ (মরমাল) ও ইনফেকশন কন্ট্রোল সেফটি পপস এবং আর্ক ও প্যান ওয়েন্ডিং হতে নির্গত ক্ষতিকর রশ্মি হতে চোখ ও মুখমণ্ডলকে নিরাপদ রাখতে প্ররেজিং হ্যান্ড দিন্ড, ওয়েল্ডিং হেলমেট ও ওয়েন্ডিং পপলুন প্রয়োজনীয় স্থানে ব্যবহার করা হয়।

মাথার সুরক্ষা উপর থেকে কোনো বন্ধু মাথায় পড়ে অথবা আঘাত লেগে যাতে আহত না করতে পারে সেজন্য মাথার সুরক্ষার জন্য শক্ত সেফটি হেলমেট, মোটা স্কাল ক্যাপ ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। এগুলো অপরিবাহী পদার্থ দিয়ে তৈরি হওয়ায় মাথার উপর থেকে প্রাপ্ত কোন বৈদ্যুতিক শক থেকেও কর্মীকে নিরাপদ রাখে। মাথা পুরোপুরিভাবে আবৃত থাকার ঘূর্ণায়মান কোনো বহুতে মাথার চুল পেঁচিয়ে গিয়ে আহত করতে পারে না।

স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বলতে কি বুঝায় - পিপিই ব্যবহারের নিয়ম - occupational hazard

ফুসফুস এর সুরক্ষা
ধূলোবালি, কর্মক্ষেত্রে নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়া, গ্যাস, উত্তর গ্যাস ইত্যাদি পরিবেষ্টিত অবস্থায় শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে যথেষ্ট কষ্ট হয়। তাছাড়া এ অবস্থায় শ্বাস নেওয়াও স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকরো। এ পরিবেশে অক্সিজেনেরও ঘাটতি হয়। এজন্য শ্বাসযন্ত্রের নিরাপত্তার জন্য নরমাল রেসপিরেটর (শ্বাসযন্ত্র) অথবা ফেসমানকযুক্ত রেসপিরেটর ব্যবহার করতে হয়।

শরীর এর জন্য সুরক্ষা সরঞ্জাম কারখানায় কাজ করতে গেলে বিভিন্ন প্রকার ময়লা, ধাতব কণা ইত্যাদি শরীরে লেগে অস্বস্তিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে মোটা কাপড়ের অ্যাপ্রন পরিধান করলে এ সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। অন্যদিকে ওয়েল্ডিংসহ এ ধরনের কোনো উত্তপ্ত পরিবেশে বা অতিরিক্ত তাপমাত্রার কাজ করতে হলে, ধাতব কণা ছিটকিয়ে গিয়ে শরীরের কাপড় চোপড় পুড়ে যেতে পারে; এমনকি গায়ে আগুনও ধরে যেতে পারে। এজন্য শরীর এর সুরক্ষার জন্য মোটা চামড়ার অ্য্যাধন, বয়লার স্যুট বা ওভারঅল, ডেন্ট, জ্যাকেট ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়।

জাত এবং বাহু (আর্য) এর জন্য সুরক্ষা সরঞ্জাম
অধিক তাপমাত্রা, সূঁচালো কোনো বন্ধ, ভারী কোনো বস্তু, বৈদ্যুতিক শক, রাসায়নিক পদার্থ, চর্ম সংক্রামক কাজ নিরাপদে করার জন্য সুতি হাত মোজা, চামড়ার হ্যান্ড গ্রোভস, চামড়ার আর্মগার্ড এবং মিটস্ (বাহুর আবরণ বিশেষ) ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়।

পায়ের পাতার সুরক্ষা

এ সরঞ্জাম ভারী কোনো বন্ধু পায়ের পাতার উপরে পড়া, হোচট খেয়ে কোনো বস্তুতে আঘাত লাগা, পিচ্ছিল মেঝে, ভিজা মেঝে, ধারালো বস্তু, পড়ে থাকা বস্তু, রাসায়নিক প্লাস, ছিটকানো উত্তপ্ত গলিত ধাতু, ধারালো বন্ধ উপর থেকে পড়ে আঘাত করা থেকে রক্ষা করে। এমনকি, বৈদ্যুতিক শক থেকেও ওয়েল্ডারকে বা কর্মীকে রক্ষা করে। এগুলোর মধ্যে সেফটি সুজ, সেফটি বুট, লেগিংস (মোটা কাপড়ের তৈরি পারের আচ্ছাদন), স্প্যাট (পাতলা আচ্ছাদন) ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

পিপিই ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা

স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ধারা- ১৯৬৫, অনুসারে সম্ভাব্য ক্ষতির বা দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য পিপিই ব্যবহার করতে হবে। সূষণ কমানোর জন্য শুধুমাত্র ব্যক্তিগত নিরাপত্তা উপাদান ব্যবহার করা ঠিক নয়। কারণ কোনো সতর্কতা বার্তা ছাড়াই এগুলো মাঝে মধ্যে শ্রমিকদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়। ঝুঁকির উপযুক্ত

নিরাপত্তা প্রদানে পিপিই এর কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে-
• ব্যবহারে আরামদায়ক নাও হতে পারে
• কাজের বাঁধা বা বিপত্তি ঘটায়
• স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার অন্যান্য ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
• ব্যয়বহুল হয়

পিপিই নির্বাচন
ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জামগুলো (পিপিই) এমনভাবে ডিজাইন করা হয় যা প্রতিটি স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। পিপিই যেমনটি হওয়া উচিত-
কাজের ধরন অনুযায়ী উপযুক্ত হতে হবে এবং বিপদের ঝুঁকির উপযুক্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে ব্যবহারকারীকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা প্রদান করবে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ে অতিরিক্ত ঝুঁকি সৃষ্টি করে না ব্যবহৃত অন্যান্য পিপিই এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও সহজে ব্যবহারযোগ্য আরামদায়ক।
ব্যবহারকারীর যে কোনো ধরনের মেডিকেল শর্তের বাঁধা বা বিপত্তি ঘটাবে না। বাংলাদেশের আদর্শমান অনুযায়ী প্রাসঙ্গিক হবে পিপিই নির্বাচনের সময় কর্মীদের সাথে আলাপ করে নিতে হবে। ব্যক্তিগত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও স্টাইলকে বিবেচনা করতে হবে।

স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বলতে কি বুঝায় - পিপিই ব্যবহারের নিয়ম - occupational hazard

পিপিই এর সঠিক ব্যবহার
পিপিই ব্যবহারের পূর্বে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি নিশ্চিত করতে হবে-
উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যক্তিগত নিরাপত্তা উপাদানগুলো (পিপিই) ব্যবহৃত হয়। পিপিই সঠিকভাবে ফিট হয় কীভাবে এটি ব্যবহৃত হয় তার নির্দেশনার জন্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যেখানে পিপিই পরিধান করতে হবে সেখানে অবশ্যই একটি চিহ্ন দিয়ে রাখতে হবে, যেন কর্মীরা খুব সহজেই মনে করে ব্যবহার করতে হবে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পিপিই এর সঠিক ব্যবহার, সংরক্ষণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে জানানো উচিত। যখন এটি জানাতে হবে- যখন নতুন শ্রমিক কাজ শুরু করে যখন নতুন পিপিই পাওয়া যায় মাঝে মাঝে কর্মীদের স্মরণ করে দেওয়া ওয়ার্কশপে কাজ করার সময় যে কোনো দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য অবশ্যই নিরাপদ পোষাক ও নিরাপদ সরঞ্জামাদি পরিধান করা দরকার। যেমন-

  • গ্রাইন্ডিং, মেশিনিং এবং চিপিং করতে নিরাপদ চশমা পরিধান করলে ছিটকে যাওয়া চিপস এর আঘাত থেকে চোখকে রক্ষা করা যায় 
  • এপ্রোন পরিধান করলে অসতর্কতাবশত ঢিলেঢালা পোষাক কোথাও জড়িয়ে বা পেঁচিয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে 
  • লম্বা চুল বেঁধে হেলমেট না পরলে ঘূর্ণায়মান কোনো যন্ত্রাংশে জড়িয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে

যন্ত্রপাতি ও মেশিনের নিরাপত্তা

যন্ত্রপাতির নিরাপত্তা বলতে বোঝায় কোনো প্রকার
যন্ত্রপাতিগুলোকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা। যেমন-
  • সঠিক নিয়মে ম্যানুয়াল অনুযায়ী মেশিন চালু করা
  • কাজ শেষে মেশিন সঠিকভাবে বন্ধ করা
  • কাজের জায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা
  • কোনো প্রকার গোলযোগ দেখা দিলে সাথে সাথে মেশিন বন্ধ করা এবং দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা সম্পন্ন করে
  • বৈদ্যুতিক সংযোগসমূহ মাঝে মাঝে পরীক্ষা করা

কারখানার নিরাপত্তা

সকল প্রকার দুর্ঘটনার হাত থেকে ওয়ার্কশপকে রক্ষা করাকে ওয়ার্কশপের নিরাপত্তা বলে। যথা-
প্রয়োজনীয় প্রটেকটিভ ডিভাইসসমেত সকল বৈদ্যুতিক সংযোগ ইনসুলেটেড রাখা দাহ্য পদার্থের পাশে ওয়েন্ডিং ও গ্রাইন্ডিং না করা আগুন নিভানোর উপকরণ, পানি, বালু ও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের ব্যবস্থা রাখা দৈবক্রমে আগুন লাগলে দ্রুত ফায়ার স্টেশনে খবর দেওয়া কারখানার অভ্যন্তর ও বাহির সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা

পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার সম্ভাব্য বিপত্তি চিহ্নিত ও প্রতিবেদন

পেশাগত বিপদ বা ঝুঁকি (Occupational Hazard)

বিপদ বা ঝুঁকি হলো যে কোনো বাস্তব অবস্থা বা ঘটনা, যার কারণে কোনো ব্যক্তির বা ধনসম্পদের বা পরিবেশের ক্ষতি বা উপাসন ব্যবস্থায় বিপত্তি বা ব্যক্তির হতাহত অথবা দীর্ঘস্থায়ী রোগ ব্যাধি হতে পারে। ঝুঁকির সর্বশেষ ফল হলো দুর্ঘটনা। সম্ভাব্য বিপদগুলো তদন্তকরণ, শনাক্তকরণ এবং দূরীকরণ বা নিরাপদ মাত্রায় কমানোর ফলে দুর্ঘটনা এড়াতে সম্ভব। দুর্ঘটনার কারণে ধারাবাহিক ক্ষতি, যেমন- স্বাস্থ্য, জীবন, পরিবেশ এবং ধন সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়।

বিপদ / ঝুঁকি এর ধরণ ও শ্রেণিবিন্যাস
কর্মক্ষেত্রে বিপদ বা ঝুঁকিকে নিম্নলিখিতভাবে ভাগ করা যায়-
শারীরিক ঝুঁকি (Physical Hazard)
রাসায়নিক ঝুঁকি (Chemical Hazard)
বায়োলজিক্যাল ঝুঁকি (Biological Hazard)
মনোসামাজিক ঝুঁকি (Pschychosocial Hazard) মানৰ ব্যৰ্থতা ঝুঁকি (Human Factor Failure Hazard)

শারীরিক ঝুঁকি
কর্মক্ষেত্রে বিদ্যমান বিভিন্ন ধরনের পদার্থের কারণে যে বিপদের সৃষ্টি হয় তাইই শারীরিক বিপদ। বিভিন্ন ধরনের উপাদান যেমন- যন্ত্রপাতি, মেশিন, বিদ্যুৎ, অত্যধিক তাপ বা ঠান্ডা, আদ্রতা, শব্দ, কম্পন, চলন্ত বস্তু, কাজের অবস্থা, স্থান ইত্যাদি।

রাসায়নিক ঝুঁকি
কাঁচামালসমূহ, উৎপাদিত পণ্য, রাসায়নিক পদার্থ, অনুঘোটক এজেন্ট ইত্যাদি কখনও ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি করে। যেমন- বিস্ফোরণ, বিকিরণ, বিষক্রিয়া, ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়া, বিষবাষ্প, মরিচা পড়া, জ্বালাপোড়া, ক্যান্সার ইত্যদি। রাসায়নিক বিপদের জন্য বিভিন্ন ধরনের পদার্থ হলো- এসিড, ক্ষার, রজ (Dyes), পেইন্ট, কুয়াশা, দ্রাবক, কটন ডা গ্যাস, বাম্প, ওয়েল্ডিং ধোয়া, হাইড্রোজেন, ক্লোরিন, রোমিয়াম, লেড বা সীमা ইত্যাদি।

বায়োলজিক্যাল ঝুঁকি
• নর্দমার পানিতে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের অনুজীব থাকে। সালফারযুক্ত দ্রব্য যেমন- গ্রীজ, তেল ইত্যাদি, আহার করে তারা শরীরে বিপাকীয় উৎপাদক হিসেবে হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস নিঃসরণ করে। কিছু মাত্রার হাইড্রোজেন সালফাইড খুবই বিষাক্ত। এসবের কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। ব্যাকটেরিয়া এ পরজীবি কীট যেগুলো হুলা বালিতে ভেসে বেড়ায়, তাদের কারণে শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা হয়। এটি এক ধরনের বায়োলজিক্যাল বিপন।

• প্রাদি এবং প্রাণির অঙ্গ প্রত্যঙ্গ (চামড়া, পশম, চুল ইত্যাদি) থেকে তৈরি পণ্য বারোলজিক্যাল বিপদের অন্তর্ভুক্ত। ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাংগাস বা পরজীবি কীট, আক্রান্ত কোনো প্রাণি বা ব্যক্তির শারীরিক সুধিত তরলের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। যেমন- অ্যান্থ্রাক্স (ব্যাকটেরিয়া), টিউবারকিউলোসিস (মাইকোব্যাকটেরিয়াম), জোটাইলিস (ভাইরাস), এসপারজিলাস (ফাংশি), বাইসিনোসিস (অডোটক্সিন), বার্ড ফ্লু ভাইরাস), ম্যাড কার্ড, সোয়াইন ইত্যাদি

মনোসামাজিক ঝুঁকি
কর্মক্ষেত্রে কাজ সম্পর্কিত অথবা কাজের অবস্থানগত্ত বিষয় যা কর্মীদের মানসিক চাপ বৃদ্ধি করে। ফলে মনোসামাজিক বিপদ সৃষ্টি হয়। যেমন- মানসিক চাপ, একঘেয়েমী কাজ, অবসাদ, অ্যাপ্তি মানসিক পীড়ন ইত্যাদি।

মানব ব্যর্থতা ঝুঁকি (Human Factor Failure Hazard)
মানব ব্যর্থতা ঝুঁকি সাধারণত মানুষের ত্রুটি এবং ব্যর্থতা ও পশ্চাদপরায়ণতা যতে সৃষ্ট। যেমন- অনিরাপদ কার্যপদ্ধতি, সঠিক কাজে সঠিক ব্যক্তির না থাকা, মাত্রাতিরিক্ত ওজনের বহু উত্তোলন বা বহন, যোগাযোগ ও সমন্বর যোগ্যতার অভাব, স্বল্প প্রশিক্ষণ, ব্যবস্থাপনাকে অবহেলা করা, অনুপযুক্ষ আচরণ ইত্যাদি। ১.৫.২ বিপদ বা ঝুঁকি শিল্প কারখানার বিপদ নিয়ন্ত্রণ একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। শিল্পকারখানা ডিজাইন করা থেকে শুরু করে উৎপাদনের সময় এবং কারখানা বন্ধ করা পর্যন্ত প্রক্রিয়া মেনে চলা হয়। এখানে আমরা বিপদ নিণের মূল ও প্রাথমিক ধারণাগুলো বর্ণনা করছি। বর্তমান সমরে প্রয়োজনীর সুবিধা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের বিশেষায়িত ধারণা তৈরি করা হয়েছে। নিম্নে এসকল ধারণাগুলো বিবেচনা করে বিপদ নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতির বর্ণনা দেওয়া হলো- বিপদ বা ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের ধাপসমূহ
(ক) বিপদ শনাক্তকরণ
(খ) বিপদের তালিকা তৈরি
(গ) বিপদ র্যাংকিং করা বা শ্রেণিকরণ করা
(ঘ) বিপদের সম্ভাবনা অ্যাসেস করা

(৩) বিপদ দূরীকরণ বা কমানো অথবা নিয়ন্ত্রণ করা
কর্মক্ষেত্রে সৃষ্ট বিপদসমূহ অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোক দিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে চিহ্নিত এবং তালিকা করতে হবে। এর পরবর্তী ধাপ হলো, সম্ভাব্য ক্ষতির তীব্রতা অনুসারে বিপদকে র্যাংকিং করা। ধারাবাহিকভাবে বিপদসমূহকে ঝুঁকির স্তর অনুসারে নিম্ন ক্রমানুসারে র‍্যাংকিং করতে হবে। পরবর্তীতে বিপদের ঝুঁকি দূর করার জন্য ভিন্ন কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত, যেটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বিপদকে কম ঝুঁকিপূর্ণ বিপদে রূপান্তর করবে অথবা বিপদকে দূর করবে। এটি সত্য কথা যে, সকল বিপদ পুরোপুরি দূর করা সম্ভব নয়। কিন্তু প্রভৃতি এমনভাবে থাকা উচিত যেন সহজেই বিপদ নিয়ন্ত্রণ করা যায় ৷

ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের (অগ্রাধিকার ভিত্তিতে) ক্রম বা পর্যায়
(১) বিপদ সৃষ্টিকারী পদার্থের পরিবর্তে কম ক্ষতিকারক পদার্থ ব্যবহার করতে হবে-
(২) কর্মক্ষেত্র থেকে ঝুঁকি সম্পূর্ণরূপে দূর করতে হবে- এটাই সবচেয়ে ভালো উপায়। উদাহরণস্বরূপ একটি শান্ত পরিবেশ থেকে একটি শব্দ সৃষ্টিকারী মেশিন যেমন-অ্যাজমা বৃদ্ধিকারক পদার্থ থাকবে না এমন পেইন্ট ব্যবহার করতে হবে।
(৩) কর্মক্ষেত্র থেকে বিপদ সরিয়ে ফেলতে হবে- যেমন-শারীরিক বিপদকে কর্মক্ষেত্র থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে অথবা যে স্থানে মেশিনটি ব্যবহৃত
(৪) উৎস থেকে বিপদ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে-
(৬) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার-
বিপদের উৎস বন্ধ করার জন্য যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদির ডিজাইন পুনরায় করতে হবে। গার্ড অথবা বায়ু চলাচলের ব্যবস্থার জন্য পুনরায় ডিজাইন করতে হবে।

(৫) প্রশাসনিকভাবে নিয়ন্ত্রণ-
এটি প্রশাসনিক কৌশল যা কর্মক্ষেত্রে কর্মীদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য নিশ্চিত করে। এটি শ্রমিকদের সময় ভাগ করে দিয়ে অথবা অন্য কোনো নিয়ম প্রয়োগ করে করতে হবে।
এ বিপদের সংস্পর্শ হ্রাস করতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে ব্যক্তিগত

ঝুঁকি অপসারণ
যেখানে কোনো বিপদ নেই সেখানে আঘাত পাওয়া বা অসুস্থ হওয়ার কোনো ঝুঁকি নেই। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়-
• এলোমেলো জঞ্জাল অপসারণ করে হোঁচট খেয়ে পড়ার মতো বিপদ দূর করতে হবে।
• অপ্রয়োজনীয় রাসায়নিক পদার্থ বর্জন করতে হবে।
• ঝুঁকিপূর্ণ মেশিন ও পদ্ধতি পরিহার করতে হবে।
• ক্ষতিগ্রস্ত যন্ত্রপাতি অতি দ্রুত মেরামত করতে হবে।
• অতিরিক্ত ফটোকপি এবং বই বা পান্ডুলিপির পরিবর্তে ই-মেইলের ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে।
• ব্যবহারকারীর কর্মযোগ্যতার সাথে নতুন যন্ত্রপাতির সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে।

ঝুঁকি সৃষ্টিকারী মালামাল ও যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপন
বিপদ দূর করা সম্ভব না হলে কম ঝুঁকিসম্পন্ন বিকল্প কিছু ব্যবস্থা করতে হবে। এটি এমনভাবে করতে হবে যেন সন্তোষজনকভাবে একই ধরনের কাজ সম্পাদন করা যায়-
বিপদ সৃষ্টিকারী পদার্থের পরিবর্তে কম ক্ষতিকারক দ্রব্য ব্যবহার করতে হবে।
• যেখানে সবসময় টেলিফোন ব্যবহৃত হয় সেখানে হ্যান্ডসেটের পরিবর্তে হেডসেট ব্যবহার করতে হবে।
• বাষ্পীয় বিপদ নিয়ন্ত্রণের জন্য কম ক্ষতিকারক দ্রব্য ব্যবহার করতে হবে।

কাজের ধারা
১. প্রথমে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামসমূহ (পিপিই), প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও মালামাল স্টোর হতে সংগ্রহ করো।
২. তালিকা অনুসারে সুরক্ষা সরঞ্জামাদী যথানিয়মে পরিধান করো।
৩. নিট মেটালের তৈরি ধাতব ট্রে এর মধ্যে মোটা বালি ছড়িয়ে দাও।
৪. জ্বালানী কাঠগুলোকে ঐ বাদিভর্তি ট্রে এর মধ্যে সাজিয়ে নাও।
৫. জ্বালানী কাঠের মধ্যে কেরোসিন তেল মিশিয়ে কিছুক্ষণ পর দিয়াশলাই দিয়ে আগুন ধরিয়ে নাও।
৬. আগুন পূর্ণমাত্রায় জ্বলে উঠার সাথে সাথে অগ্নিনির্বাপক এর পিনটি চিত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী
পিনটি টেনে খুলে নাও
৭. তাৎক্ষণিকভাবে ডান যাতে লিভার ও বাম হাতে আউটলেট পাইপটি ধরে আগুনের দিকে একা সাথে তাক করো।
৮. ডান হাতে পিতার চেপে ধরো এবং বাম হাতে অগ্নিশিখার মধ্যে নির্গত গ্যাস ডানে বামে ঘুরিয়ে ছড়িয়ে পাও যাতে আগুন সম্পূর্ণ নিভে যায়।
৯. শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষক হামাগুড়ি দিয়ে দ্রুত ওয়ার্কশপের অগ্নিবর্ণি(Fire Exit) পর্যন্ত পৌঁছাবে এবং যত দ্রুত সম্ভব দরজা খুলে দৌঁড়ে সবাইকে নিয়ে বের হয়ে আসবে।

কাজের সতর্কতা
• সঠিক সময়ে সকল প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সরগ্রাম পরিধান করা আবশ্যক অগ্নিনির্বাপক যথাযথ সতর্কতার সাথে ব্যবহার করাতে হবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url