পরিমাপক যন্ত্র - Positive zero error - Negative zero error

 পরিমাপক যন্ত্র - Positive zero error - Negative zero error
পরিমাপক যন্ত্র - Positive zero error - Negative zero error

পরিমাপক যন্ত্র - Positive zero error - Negative zero error

কার্যক্ষেত্রে পরিমাপক যন্ত্র Measuring Instruments in the Workplace

পরিমাপ প্রত্যেকের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ- মেডিকেল চেক-আপের সময়, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বাড়ি তৈরির সময় বা রান্নার সময় বিভিন্ন পরিমাপক যন্ত্র দিয়ে পরিমাপ নিতে হয়। ভ্রমণের দূরত্ব গণনা, নির্মাণে দৈর্ঘ্য নির্ধারণ, বায়ু এবং জলের তাপমাত্রা নির্ণয়, টায়ারের ভিতরে বায়ুর চাপ মাপতে আলাদা আলাদা পরিমাপক যন্ত্র রয়েছে। শিল্প কারখানার মালিক ও শ্রমিককে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তুলনামূলক পরিমাপের উপর নির্ভর করতে হয়। সঠিক, নির্ভরযোগ্য এবং গুণগতমান নিশ্চিত করার ফলে কল কারখানায় উৎপাদনের মান ও পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। একজন ওয়েল্ডারকেও কার্যক্ষেত্রে কিছু পরিমাপক যন্ত্র ব্যবহার করতে হয়। এ অধ্যায়ে আমরা সেগুলোর সাথে পরিচিত হন এবং তাদের ব্যবহারও শিখে নেব। সঠিক, নির্ভরযোগ্য ও মানসম্মত ওয়েন্ডিং করতে হলে অবশ্যই সঠিক পরিমাপ' আবশ্যক। আর পরিমাপ সঠিক হওয়ার পূর্ব শর্তই হলো পরিমাপক যন্ত্রগুলোর সঠিক ব্যবহার সম্বন্ধে জানা। ওয়েল্ডিং করার পূর্বে যেমন সঠিক মাপের কার্যবস্তু কাটা এবং সেগুলোর সঠিক মাপের পার্শ্ব প্রভৃতি সম্পন্ন করা জরুরি, তেমনি ওয়েল্ডিং এর পর যথাযথ মাপের ও মানের জোড়া এবং ওয়েভ তৈরি হয়েছে কি না তাও পরীক্ষা করা একান্তই প্রয়োজন। ওয়েল্ডিং এ যে সমস্ত পরিমাপক যন্ত্রাদি ব্যবহৃত হয় তাদের মধ্যে বহুল ব্যবহৃত কয়েকটি পরিমাপক যন্ত্রের পরিচিতি ও তাদের ব্যবহার নিচে আলোচনা করা হলো।

স্টিল রুপ (Steel Rule)

ওয়ার্কশপে পরিমাপের জন্য যে টি সহজে ও অধিক পরিমাণে ব্যবহৃত হয় তা হলো স্টিল রুল। এটি উন্নত মানের শংকর ইস্পাত দিয়ে তৈরি। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে তৈরি হয়। এটির দৈর্ঘ্য সাধারণত ৩০০ মিলিমিটার (১২ ইঞ্চি) এবং এছ ১২ মিলিমিটার (আধা ইঞ্চি) হয়। তবে ১৫০ মিলিমিটার (৬ ইঞ্চি)দীর্ঘ ও ১২ মিলিমিটার (আধা ইঞ্চি) প্রস্থবিশিষ্ট স্টিম রুলও পাওয়া যায়। ওয়ার্কশপের সাধারণ কাজে এ রুল অধিক ব্যবহৃত হয়। ওয়েল্ডারগণ ওরেন্ডিং জোড়া তৈরি করার পূর্বে জনের পার্শ্ব প্রস্তুতের সময় মাপ নেওয়ার কাজে এটি ব্যবহার করে থাকেন। ধাতব পদার্থে লে-আউট করার জন্য বিশেষভাবে তৈরি রুম্পগুলি ১ মিটার পর্যন্ত দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট্য হয়ে থাকে।

পরিমাপক যন্ত্র - Positive zero error - Negative zero error

স্টিল টেপ (Steel Tape )

একজন ওয়েভার এটি সহজেই পকেটে বহন করতে পারে। স্টিল রুল দিয়ে সর্বোচ্চ ১ মিটার দৈর্ঘ্য পরিমাপ করা যায়। অন্যদিকে স্টিল টেপ দিয়ে ১০ মিটার পর্যন্ত মাপ নেওয়া যায়। ইস্পাতের তৈরি এ ধরনের টেপ জড়িয়ে কুণ্ডলি আকারে একটি কভারের মধ্যে থাকে; ফলে ওয়েল্ডার এটি সহজেই তার পকেটে রাখতে পারেন। যতটুকু দৈর্ঘ্য প্রয়োজন ঠিক ততটুকু পরিমাণ কভারের ভিতর হতে বের করা যায়। লম্বা গ্রিন বা দরজা জানালা তৈরির সময় মাপ নিতে এ ধরণের টেপ বা ফিতা খুবই উপযোগী।
এ ফিভার এক ধারে ইঞ্চি ও তার ভগ্নাংশ এবং ফুট মাপ ও অন্য ধারে মিলিমিটার, সেন্টিমিটার ও মিটার দাগাংকিত থাকে

ট্রাই স্বয়ার (Tri-Square)

কোনো বস্তুর একটি জলের সাথে আরেকটি তল সমকোণে (৯০) আছে কি না তা পরীক্ষা করতে এটি খুবই উপযোগী। এছাড়াও কোনো তলে সমান্তরাল রেখা টানতে এটি ব্যবহৃত হয়। চলিত ভাষায় একে মাটাম বলে। ট্রাইডয়ার এর দুটি অংশ- স্টক ও ব্লেড। ব্লেড ও স্টকের মধ্যবর্তী কোণ ৯০ ডিগ্রি। ট্রাইফয়ারের দৈর্ঘ্য বলতে এর ব্রেডের মাপকে বোঝায়। ব্রেডের মাপ সাধারণত ২.৫ সেন্টিমিটার ক্রমে বর্ধিত হয়ে ৫ সেন্টিমিটার হতে ১৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে বিশেষ শ্রেণির ট্রাইফয়ারগুলো ৫ সেন্টিমিটার ক্রমে বর্ধিত হয়ে ২০ সেন্টিমিটার হতে ৪০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। নিচে ট্রাইক্ষরারের বিভিন্ন ব্যবহার দেখানো হলো।

আউট সাইড ক্যালিপার্স (Outside Callipers)

এটি একটি পরোক্ষ পরিমাপক যন্ত্র, যার দু'টি লেগ বা পা আছে। পাগুলো ক্রমশ চিকন হয়। কোনো কোনাকৃতি বস্তুর বাইরের ব্যাস মাপার জন্য 'আউটসাইড ক্যালিপার্স ব্যবহৃত হয়। প্রথমে কালিপার্স এর লেগ দুটি বস্তুর ব্যাসের উপর এডজাস্ট করে একটি অজানা যাগ নেওয়ার পর উষ্ণ যাগটির পরিমাণ স্টিল রু দিয়ে জানা যায় চিত্র-৩১১ তে আউটসাউড ক্যালিপার্স দিয়ে ব্যাস মাপ নেওয়ার (বামে) পর স্টিল রুল দিয়ে পরিমাণ দেখা হচ্ছে (ডানে)।

ইন সাইড ক্যালিপার্স (Inside Calllpers )

কোনো ছিদ্রের বা গর্ভের ভিতরের ব্যাস এবং কোনো নালির ভিতরের মাপ গ্রহণ করার জন্য ‘ইনসাইড ক্যালিপার্স' ব্যবহৃত হয়।

ডিভাইডার (Divider)
এটি দু'পা বিশিষ্ট সরল গঠনের একটি পরোক্ষ পরিমাপক যন্ত্র। পাগুলোর শেষ প্রাপ্ত বেশ চোখা অর্থাৎ পয়েন্ট করা থাকে। পরোক্ষ মাগন যা হওয়ায় ডিভাইডারের দ্বারা সরাসরি কোনো মাপ গ্রহণ করা যায় না, তবে এর সাহায্যে কোনো মাপ নিয়ে তা স্টিল ফলে মিশিয়ে বন্ধুটির মাপ কত তা জানা যায়। তাছাড়া জবের উপর বৃত্ত আঁকতে ও ধাতু কাটিং এর সময় লে-আউট করতে ডিভাইডার বেশি ব্যবহৃত হয় (চিত্র-৩-১৪)।

ভার্নিয়ার ক্যালিপার (Vernier Caliper)

ভার্নিয়ার ক্যালিপার একটি সুক্ষ্ম রৈখিক পরিমাপক যন্ত্র যা ১৬৩১ সালে ফ্রান্সের পিয়েরে ভার্নিয়ার প্রবর্তন করেছিলেন। এখানে দুটি ফেল ব্যবহৃত হয়, একটি রুপারের অনুরূপ প্রধান ছেল আর একটি সহায়ক ফেল হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা ভার্নিয়ার ফেল নামে পরিচিত। ভার্নিয়ার ফেলটি প্রধান ছেলের সমান্তরালে পিছলিয়ে (Slide) চলে এবং এটি প্রধান ক্ষেলের একটি বিভাগের ভগ্নাংশ রিডিং করতে সক্ষম ।
সাধারণত প্রধান ছেলের একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ঘরের সমান অংশকে ভার্নিয়ার ছেলে প্রধান ছেলের ঐ সংখ্যক ভাগ হতে এক ভাগ বেশি সাগাংকিত থাকে। চিত্র-৩১৬ তে প্রদর্শিত ভার্নিয়ার ক্যালিপারটিতে প্রধান খেলের ১৯ ভাগকে জার্ণিয়ার ছেলে সমান ২০ ভাগে ভাগ করে লাগাংকিত করা হয়েছে। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগারে এবং উৎপাদনের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য শিল্প কারখানায় ভার্নিয়ার ক্যালিপার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে কোনো ফেল ছাড়াই এক ধরনের ডিজিটাল ভার্নিয়ার ক্যালিপার পাওয়া যায়ল। এর ডিসপ্লে হতে সরাসরি মাপ পড়া যায়। ভার্নিয়ার ক্যালিপারে একটি প্রধান ক্ষেল ও একটি ভার্নিয়ার খেল ছাড়াও দু'জোড়া 'জ' ও কোনো বছর গভীরতা মাপার জন্য একটি ব্রেড আছে। এক জোড়া 'জ' কোনো কোনাকৃতি বস্তুর দৈর্ঘ্য, গোলাকার বছর বাহিরের ব্যাস ও বাহিরের মাপ নিতে এবং অন্য জোড়া 'জ' কোনো বছর ভিতরের মাপ নিতে ব্যবহৃত হয়।
পরিমাপক যন্ত্র - Positive zero error - Negative zero error

ভার্নিয়ার ধ্রুবক (Vernier Constant)

নির্ণয় ভার্নিয়ার ধ্রুবক নির্ণয়ের অন্য দুটি ফর্মুলা আছে-
১. ভার্নিয়ার ধ্রুবক = (প্রধান ছেলের ক্ষুদ্রতম ১ ভাগের মান) - (ভার্নিয়ার ছেলের ক্ষুদ্রতম ১ ভাগের মান ২. ভার্নিয়ার ধ্রুবক = প্রধান ছেলের ক্ষুদ্রতম ১ ভাগের মান ভার্নিয়ার ছেলের ভাগ সংখ্যা ভৰে ২ নং ফর্মুলাটি সহজ, এজন্য আমরা সকল ক্ষেত্রে ২ নং ফর্মুলাটিই ব্যবহার করবো।
উদাহরণ-১: তে যে ভার্নিয়ার ক্যালিপারটি দেখানো হয়েছে, ঐ ভার্নিয়ারটির ভাগ সংখ্যা 10 এবং প্রধান ক্ষেলের ক্ষুদ্রতম এক ভাগের মান 1 মিলিমিটার। অভগ্ন, ভার্নিয়ার ধ্রুবক = 10 মিলিমিটার
= 0.1 মিলিমিটার

ফার্নিচার ক্যালিপারের শূন্য ত্রুটি
কোনো পরিমাপ যন্ত্রের শূন্য ত্রুটি একটি সাধারণ ত্রুটি। সঠিক ক্যালিব্রেশন না হওয়া, দীর্ঘ দিন ব্যবহারের ফলে ক্ষয়, ধর্ষণ, চাপ ইত্যাদি কারণে এ ধরনের ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়। ভার্নিয়ার ক্যালিপার এর 'ড' দুটি যখন একত্রে মিলানো হয় তখন প্রধান ছেলের ০ (শূন্য) চিহ্নিত রেখা যদি ভার্নিয়ারের ০ (শূন্য) চিহ্নিত রেখার সাথে মিলে যার তখন আমরা বলে থাকি ক্যালিপারটি শূন্য ত্রুটিহীন। যদি উক্ত অ পরস্পর মিলিত হলে ভার্ণিয়ারের শূন্য রেখা যদি প্রধান ছেলের শূন্য রেখার ডানে অথবা বামে অবস্থান করে তখন উক্ত অবস্থাকে ভার্নিয়ারের শূন্য ত্রুটি বলে।

ফার্নিয়ার ক্যালিপারে সাধারণত দু'ধরনের শূন্য ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়। যথা-
(ক) ধনাত্মক শূন্য ত্রুটি (Positive Zero Error)
অনুযায়ী যদি ভার্নিয়ার ছেলের শূন্য দাগ প্রধান ছেলের শূন্য দাগের পিছনে অবস্থান করে তাহলে তাকে ভার্নিয়ার ক্যালিপারের 'ধনাত্মক শূন্য ত্রুটি' বলে। এ অবস্থায় প্রকৃত মাপ হতে মাপ বেশি দেখায় বলে উক্ত ত্রুটির সমপরিমাণ মাপ ভার্নিয়ারের পাঠ হতে বাদ দেওয়া হয়। এখানে ভার্নিয়ারের ৪ সংখ্যক রেখাটি প্রধান ছেলের যে কোন একটি রেখার সাথে সবচেয়ে বেশি মিলেছে সেজন্য এটির ধনাত্মক শূন্য ত্রুটি = 4 x 0.01 সেন্টিমিটার (যেহেতু ভার্নিয়ার ধ্রুব 0.1 মিলিমিটার বা 0.01 সেন্টিমিটার)
= 0.04 সেন্টিমিটার।

যেমন- একটি বস্তুর মাপ পাওয়া গেছে 3.34 সেন্টিমিটার। প্রদর্শিত ভার্নিয়ার ক্যালিপারে নেয়া হয় তাহলে পরিমাপকৃত বন্ধুটির প্রকৃত মাপ হবে -- = (3.34 0.04 ) সেন্টিমিটার = 3.30 সেন্টিমিটার।

(খ) ঋণাত্মক শূন্য ত্রুটি (Negative Zero Error)
যদি ভার্নিয়ার ছেলের শূন্য দাগ প্রধান স্কেলের শূন্য দাগ অতিক্রম করে অস্ত্রে অবস্থান করে তাহলে তাকে ভার্নিয়ার ক্যালিপারের ঋণাত্মক শূন্য ত্রুটি' বলে। এ অবস্থায় প্রকৃত মাপ হতে মাণ কম দেখার বলে উক্ত ত্রুটির সমপরিমাণ মাপ ভার্নিয়ারের পাঠের সাথে যোগ করতে হয়। এখানেও ভার্নিয়ারের ৪ সংখ্যক রেখাটি প্রধান ছেলের যে কোন একটি রেখার সাথে সবচেয়ে বেশি মিলেছে সেজন্য এটির ঋণাত্মক শূন্য ত্রুটি = 4 x 0.01 সেন্টিমিটার ( যেহেতু ভার্নিয়ার ধ্রুব 0.1 মিলিমিটার বা 0.01 সেন্টিমিটার)
= 0.04 সেন্টিমিটার।

প্রদর্শিত ভার্নিয়ার ক্যালিপারে মাপ নেয়া হয় তাহলে পরিমাপকৃত বন্ধুটির প্রকৃত মাপ হবে = (3.34 + 0.04 সেন্টিমিটার = 3.38 সেন্টিমিটার।

মাইক্রোমিটাৰ (Micrometer)

এটি কখনও কখনও 'মাইক্রোমিটার ডু গো' হিসেবে পরিচিত। এটি একটি ডিভাইস যা ক্যালিব্রেটেড সমন্বয়ে কোনো বছর সঠিক মাপ নিতে ব্যবহৃত হয়। মাইক্রোমিটার সাধারণত দুটি বিশিষ্ট (বিপরীতমুখী প্রান্তগুলো একটি ফ্রেমের সাথে যুক্ত) ক্যালিপারের মত।
এর ফ্রেমের সাথে এ্যানভিল স্থির অবস্থায় থাকে। এ্যানভিলের অপর প্রান্তে একটি স্পিন্ডল বিষলের সাথে সংযুক্ত থাকে। স্পিন্ডলটিকে ব্যারেলের সাথে ক্রু গ্রেডের মাধ্যমে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সামনে পিছনে সরানো যায়। স্পিন্ডলটি খুবই সঠিকভাবে (Very Accurately)

যে বস্তুটি পরিমাপ করা হবে সেটি স্পিন্ডল ও এ্যানভিলের মধ্যে স্থাপন করা হয়। স্পিন্ডলটিকে র্যাচেটের নব বা বিশ্বল ঘুরিয়ে এমনভাবে সরানো হয় যতক্ষণ না পরিমাপ করা বস্তুটি স্পিন্ডল এবং ম্যানভিল উভয় দ্বারা হালকাভাবে স্পর্শ করে। ব্যারেলের উপর লম্বালম্বিভাবে রৈখিক ফেল এবং বিশ্বলের উপর বৃত্তাকার ফেল থাকে। রৈখিক ক্ষেত্রের উপরের দিকে মিলিমিটার ও সেন্টিমিটারে দাগাংকিত থাকে এবং নিচের দিকে প্রতি মিলিমিটার এর মাঝে একটি করে দাগ টানা থাকে। বৃত্তাকার স্কেলটি 50 ভাগে বিভক্ত করা থাকে। বৃত্তাকার ক্ষেলটি একবার ঘুরালে রৈখিক জেলটি 0.5 মিলিমিটার দৈর্ঘ্যে অগ্রসর হয়। অর্থাৎ বৃত্তাকার ক্ষেলের এক ঘরের মান 0.5 মিলিমিটার + 50 = 0.01 মিলিমিটার। এই মানকে মাইক্রোমিটারের ন্যূনাঙ্ক (Least Count) বলে।

মাইক্রোমিটারে পাঠ নেওয়া
যে জবটিকে মাপতে হবে সেটিকে মাইক্রোমিটারের এ্যানভিল ও স্পিন্ডল এর মধ্যবর্তী স্থানে রেখে বিল বা র‍্যাচেট স্টপকে ঘুরিয়ে ঐ ভবটির কাছাকাছি আনতে হবে। এবার র‍্যাচেট স্টপকে ধরে খিলকে ঘুরিয়ে জবের উপর চাপ দিতে হবে। প্রয়োজনীয় চাপ পড়ার পর বিলটি যখন ঘোরা বন্ধ হয়ে যাবে এবং র‍্যাচেট স্টপ দিয়ে ঘুরানোর চেষ্টা করলে যখন কেবলমাত্র কটকট শব্দ করে র‍্যাচেট স্টপ ঘুরতে থাকবে কিন্তু বিল ঘুরবে না, তখনই লক নাট টাইট করে দিতে হবে। এবার প্রধান স্কেল পাঠ ও বৃত্তাকার ক্ষেল পাঠ লক্ষ্য করতে হবে। নিচের ফর্মুলা হতে মোট পাঠ বা জবের মাপ পাওয়া যায়। কোনো বস্তুর মাপ = প্রধান ফেলপাঠ + (বৃত্তাকার ফেল পাঠ x ानা )

সমাধান:
আমরা জানি,
মাইক্রোমিটারের পাঠ = প্রধান ক্ষেপাঠ + (বৃত্তাকার ক্ষেল পাঠ x ন্যূনাঙ্ক
= [ 1 মিলিমিটারের ঘর সংখ্যা + 0.50 ( যদি 0.5 মিলিমিটার ঘর পার হয়)} + (বৃত্তাকার খেল পাঠ x ন্যূনাঙ্ক) মিলিমিটার
= { (10 + 0.50) + ( 15 x 0.01 )} মিলিমিটার 10.65 মিলিমিটার।

সমাধান
আমরা জানি,
মাইক্রোমিটারের পাঠ = প্রধান ফেলপাঠ + (বৃত্তাকার ফেল পাঠ = ন্যূনাঙ্ক
= [ 1 মিলিমিটারের পর সংখ্যা + 0.50 ( যদি কোনো 0.5 মিলিমিটার ঘর পার হয়)} + (বৃত্তাকার খেল পাঠ = ন্যূনাঙ্ক ) মিলিমিটার
= [ 4 +0 মিলিমিটার ( যেহেতু 0.5 মিলিমিটারের কোনো ঘর পার হয়নি)}+ (14 = 0.01 )
= 4.14 মিলিমিটার।

ডিজিটাল মাইক্রোমিটার

দৈর্ঘ্য, ব্যাস বা বেধের মাত্রা পরিমাণ করতে ডিজিটাল মাইক্রোমিটার ব্যবহার করা হয়। একটি ডিজিটাল মাইক্রোমিটারে ফ্রেম, এ্যানভিল, স্পিন্ডল, শক নাট, থিফল, র্যাচেট স্টপ, এলসিডি ডিসপ্লে, ডেটা আউটপুট ইত্যাদি থাকে। এর ডিসপ্লেতে সরাসরি মাপ দেখা যায়।

মাইক্রোমিটারের ক্রুটি

মাইক্রোমিটারে সাধারণত তিন ধরনের অবস্থা দেখা যায়-
(ক) শূন্য ত্রুটিহীন (No zero error)
(খ) ধনাত্মক শূন্য ত্রুটি (Positive zero error)
(গ) ঋণাত্মক শূন্য ত্রুটি (Negative zero error)

শূন্য ত্রুটিহীন (No zero error)
যখন মাইক্রোমিটার এর এনভিল ও স্পিন্ডল দু'টির মুখ একত্র করা হয় তখন ব্যারেলের উপর প্রধান ছেলের ডেটাম লাইন বরাবর বিশ্বশের শূন্য (0) রেখার সাথে মিলে যায়। এ অবস্থাকে মাইক্রোমিটারের শূন্য ত্রুটিহীন (No zero error) বলে ।

ধনাত্মক শূন্য ত্রুটি (Positive zero error)
যখন মাইক্রোমিটার এর এনভিল ও স্পিন্ডল দুটির মুখ একত্র করা হয় তখন বিবলের শূন্য (০) রেখা ব্যারেলের উপর প্রধান স্কেলের ডেটাম রেখার সাথে মিলে যায় না। বরং বৃত্তাকার ছেলের শূন্য চিহ্নটি মূল স্কেল ডেটাম লাইনের নিচে চলে আসে। এক্ষেত্রে পজিটিভ ভ্যালু (প্লাস রিডিং) হয় যা (রিডিং) মূল মাপ হতে বাদ দেওয়া হয়। মাইক্রোমিটারের এ ত্রুটিকে 'ধনাত্মক শূন্য ত্রুটি (Positive zero error) বলে। থিম্বলের ০ (শূন্য) সংখ্যক রেখাটি প্রধান জ্বেলের ডেটাম লাইন হতে 2 ঘর নিচে এসে মিলেছে। এজন্য এ ত্রুটিযুক্ত মাইক্রোমিটারের যে মোট পাঠ পাওয়া যাবে তার সাথে (2 x 0.01 ) = 0.02 মিলিমিটার মাপ বাদ যাবে।

ঋণাত্মক শূন্য ত্রুটি (Negative zero error)
যখন মাইক্রোমিটার এর এনভিল ও স্পিন্ডল দু'টির মুখ একত্র করা হয় তখন থিম্বলের শূন্য (০) রেখা ব্যারেলের উপর প্রধান ক্ষেলের ডেটাম রেখার সাথে মিলে যায় না বরং বৃত্তাকার ছেলের শূন্য চিহ্নটি মূল স্কেল ডেটাম লাইনের উপরে থাকে। এক্ষেত্রে নিগেটিভ ভ্যালু (মাইনাস রিডিং) হয় যা (রিডিং) মূল মাপের সাথে যোগ করা হয়। মাইক্রোমিটারের এ ত্রুটিকে ঋণাত্মক শূন্য ত্রুটি' (Negative zero error) বলে।
বিষলের ০ (শূন্য) সংখ্যক রেখাটি প্রধান স্কেলের ডেটাম লাইন হতে 4 ঘর উপরে এসে মিলেছে। এজন্য এ ত্রুটিযুক্ত মাইক্রোমিটারের যে মোট পাঠ পাওয়া যাবে তার সাথে ( 4 x 0.01 ) = 0.04 মিলিমিটার মাপ যোগ করতে হবে।

ওয়েল্ড ফিলেট গেজ (Weld Fillet Gauge

এ গেজ দিয়ে 'ওয়েল্ড ফিলেট এর লেগ লেং প্রোটের পুরুত্ব যাগ ০.০০৫ ইঞ্চি সুক্ষ্মতায় নির্ভুলভাবে নেওয়া যায়। এ পেজ দিয়ে এগারো সাইজের ফিলেট ওয়ে বদ্ধা- ১/৪, ৩/১৬, ১/৮, ৫/১৬, ৩/৮, ৭/১৬, ১/২, ৫/৮, ৩/৪, ৭/৮, ও ১ ইঞ্চি এবং তাদের মেট্রিক সমতুল্য পরিমাণ দ্রুত ও সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে এটি খুবই ফলপ্রসু। এটি অবতন বা উত্তল উভয় ওয়েন্ডের মাণ নেওয়ার ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়।
প্রতিটি গেজ রেড মরিচা এবং বাঁক প্রতিরোধ করার জন্য কোল্ড রোল্ড স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে তৈরি। ব্লেডের পৃষ্ঠে প্রাচ্চের দিকে সহজে পড়ার জন্য সমস্ত ওয়েন্ডের আকার ইঞ্চিতে ও সমতুল্য মেট্রিক মাপ খোদাই করা আছে। কোনো ওয়েন্ডের ফিলেটের মাপ নিতে ব্রেডগুলো একে একে ম্যাচ করানো হয়; যেটি ভালোভাবে ম্যাচ করে সেটিই উক্ত ফিলেটের সঠিক পরিমাপ বলে বিবেচিত হয়।

কৌণিক পরিমাপক যন্ত্র

(ক) কম্বিনেশন সেট (Combination Set)
কম্বিনেশন সেটটি একটি ব্লেড বা ক্ষেল, একটি ক্ষমার হেড, একটি প্রট্রাক্টর হেড এবং একটি সেন্টার হেড নিয়ে গঠিত। এটাতে ১২ ইঞ্চি হতে ২৪ ইঞ্চি লম্বা যে ব্লেডটি আছে তা বেশ পুরু এবং এর দৈর্ঘ্য বরাবর খাঁজকাটা। এই খাঁজটিতেই ক্ষয়ারিং হেড, ট্রাক্টর হেড ও সেন্টার হেড স্লাইডিং করে চলাচল করতে পারে।
এখন আমরা পর্যায়ক্রমে কম্বিনেশন সেট এর বিভিন্ন ব্যবহার শিখব -

(খ) স্কয়ার হেড (Square Head)
এটি কম্বিনেশন সেটের সর্বাধিক ব্যবহৃত অংশ। এটি সচরাচর কোনো জায়েন্টের কোণ সমকোণ' বা ৪৫ ডিগ্রী আছে কিনা তা চেক করতে ব্যবহৃত হয়। ন্যাড়াও ব্লেড এর সহায়তায় বিভিন্ন হোল এর গভীরতা ও কোণ পরিমাপ করা যায়। এটি বৃত্তাকার বন্ধুর কেন্দ্র নির্ধারণ করতে ব্যবহৃত হয়, যেমন- রঙের শেষ থাক। যেহেতু সেন্টার-হেড এর 'বাহু' পরস্পর 90 ডিগ্রিতে থাকে, সেজন্য কোনও বছর কোণ পুরোপুরি বর্গাকার কিনা তা নির্ধারণ করতেও সেটার হেড ব্যবহার করা যেতে পারে। একটি বৃত্তাকার বন্ধুকে সেন্টার হেডের মাঝে রেখে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে কয়েকটা নাগ দিরে দাগগুলোর ছেদ বিন্দু নির্ণয় করা হয়। বলাই বাহুল্য যে, উক্ত হেল বিন্দুই জাতি বাটির কেন্দ্র বি

(গ) প্রট্রানীর হেড (Protractor Head)
প্রাথমিকভাবে এট্রাক্টর হেড ছেলের সাথে মিলে কোনো বছর কোণের সঠিক পরিমাপ বের করতে ব্যবহৃত হয়। কোনো ভলের বা প্রাজ্ঞের কোণ মাপতে বা চেক করতে মূলত এটি ব্যবহৃত হলেও কোনো বছর নির্দিষ্ট জলে নির্দিষ্ট কোণে দাগ কাটার জন্য মার্কিং করতেও এর ব্যবহার আছে।

বিভেল প্রেট্রাক্টর
(Bevel Protractor) কম্বিনেশন সেটের খট্রাক্টর হেড যে যে কাজে ব্যবহৃত হয় এটিও সেই একই কাজে ব্যবহৃত হয়; পার্থক্য শুধু এতটুকু যে এতে এট্রাক্টরের সাথে একটি ভার্নিয়ার ফেল থাকে। ভার্নিয়ার থাকার ফলে বিভেল এট্রাক্টরের দিয়ে অপেক্ষাকৃত অধিক সুক্ষ্মতার কোনো বস্তুর কৌণিক মাপ নেয়া সম্ভব। চিত্র-3.80 তে বিভেন এট্রাক্টরের সাহায্যে মাপ নেওয়ার পদ্ধতি দেখানো হলো।

এন্জেল গেজ (Angle Gauge)
অ্যাঙ্গেল গেজগুলি প্রায় 75 মিমি লম্বা এবং 16 মিমি প্রশস্ত শক্ত স্টিলের তৈরি। বিভিন্ন বস্তুর কোণ পরিমাপের জন্য, এঙ্গেল গেজগুলি 0.5 থেকে 0.25 সেকেন্ডের নির্ভুলতার সাথে 0 ডিগ্রী এবং 360 ডিগ্রির মধ্যে যে কোনো কোণ পরিমাপ করতে সক্ষম। বর্তমানে ডিজিটাল এজেল গেজ দিয়ে আরও সহজে ও দ্রুত কোণ পরিমাপ করা যায়। সরাসরি যে কোনো কৌণিক মাপ নেওয়ার জন্য ডিজিটাল এদেল গেজ পাওয়া যায়।

কাজের ধারা:
১. প্রয়োজনীয় পিপিই পরিধান করো।
২. পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিরীক্ষা করো।
৩. নির্দিষ্ট স্টোর হতে ইতিপূর্বে ফিলেট ওয়েল্ড সম্পন্ন করা একটি কার্যবস্তু ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করো।
৪. প্রতিটি টুল্স ও সরঞ্জামাদি ব্যবহারের ক্ষেত্রে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হতে সরবরাহকৃত ম্যানুয়াল অনুসরণ করো।
৫. কার্যবস্তুটিকে বেঞ্চ ভাইসে বেধে চিপিং হ্যামার ও ওয়্যার ব্রাশ দিয়ে 'ফিলেটটি' পরিষ্কার করে নাও।
৬. কার্যবস্তুটির টী জোড়া সমকোণে আছে কি না তা পরীক্ষা করো।
৭. 'কম্বিনেশন সেট' এর ব্লেডের সাথে স্কয়ার হেড ব্যবহার করে টী জোড়ের সমকোণ পরীক্ষা করো।
৮. 'কম্বিনেশন সেট' এর ব্লেডের সাথে প্রট্রাক্টর-হেড ব্যবহার করে টা জোড়ের সঠিক কোণ নির্ণয় করো।
৯. নির্দিষ্ট ফর্মুলা ব্যবহার করে ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স এর ভার্নিয়ার ধ্রুব বের করো।
১০. স্টিল রুল এর সাহায্যে  'টী' জোড়ে ব্যবহৃত প্লেট দুটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ মাপ নির্ণয়ের জন্য পাঠ গ্রহণ করো।
১১. ভার্নিয়ার ক্যালিপার এর সাহায্যে জোড়ে ব্যবহৃত প্লেট দুটির দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও পুরুত্ব মাপ নির্ণয়ের জন্য পাঠ গ্রহণ করো।
১২. মাইক্রোমিটার এর সাহায্যে জোড়ে ব্যবহৃত প্লেট দুটির পুরুত্ব মাপ নির্ণয়ের জন্য পাঠ গ্রহণ করো।
১৩. 'ওয়েল্ড ফিলেট গেজ' দিয়ে ফিলেটের থ্রোট থিকনেস নির্ণয় কর।
১৪. বিভিন্ন ছকে প্রাপ্ত পাঠগুলো হতে হিসেব করে পরিমাপ নির্ণয় করো।
১৫. 'ওয়েল্ড ফিলেট গেজ দিয়ে ফিলেটের থ্রোট থিকনেস নির্ণয় করে লেখ।
১৬. 'ওয়েল্ড ফিলেট গেজ দিয়ে ফিলেটের লেগ লেংথ নির্ণয় করে করো।
১৭. কাজ শেষে নাইলনের ব্রাশ দিয়ে কাজে ব্যবহৃত সমস্ত টুল্স, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি পরিষ্কার করো।
১৮. টুল্সগুলো তেল দিয়ে যথাস্থানে বা সংরক্ষণের জন্য নির্ধারিত বাক্সে রাখ।
১৯. ভার্নিয়ার ক্যালিপার ও মাইক্রোমিটার দিয়ে নির্ণিত প্লেটের পুরুত্ব মাপ এর সূক্ষ্মতার মধ্যে তুলনা করো।
২০. প্রাপ্ত ফলাফল শিক্ষককে দেখিয়ে স্বাক্ষর করে জমা দাও ।

কাজের সতর্কতা

  • ভার্নিয়ার ক্যালিপার ও মাইক্রোমিটার সূক্ষ্ম পরিমাপক যন্ত্র। এগুলো হাত থেকে পড়ে গেলে, আঘাতপ্রাপ্ত হলে, চাপে থাকলে অথবা অধিক উত্তপ্ত পরিবেশে ব্যবহার করলে এর সূক্ষ্মতা নষ্ট হয়।
  • তাই এসব যন্ত্রপাতি ব্যবহারের সময় অধিক সতর্ক হতে হবে। মাইক্রোমিটারে মাপ নেওয়ার সময় সর্বদা র‍্যাচেট স্টপ ঘুরিয়ে কোন বস্তুর মাপ নিতে হবে। কোন অবস্থাতেই থিম্বল ঘুরিয়ে মাপ নেওয়ার চেষ্টা করা উচিৎ নয়। এতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে মাইক্রেমিটারের মাপ সঠিক হয় না, উপরোন্ত তাতে মাইক্রোমিটারে ত্রুটি দেখা দিতে পারে।
  • ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স ও মাইক্রোমিটার এ শূন্য ত্রুটি আছে কি না দেখে নিতে হবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url