ওয়েল্ডিং এর বিভিন্ন প্রকার জোড়ার - types of welding joints - ওয়েল্ডিং ইলেক্ট্রোড

 ওয়েল্ডিং এর বিভিন্ন প্রকার জোড়ার - types of welding joints - ওয়েল্ডিং ইলেক্ট্রোড
ওয়েল্ডিং এর বিভিন্ন প্রকার জোড়ার - types of welding joints - ওয়েল্ডিং ইলেক্ট্রোড

ওয়েল্ডিং এর বিভিন্ন প্রকার জোড়ার - types of welding joints - ওয়েল্ডিং ইলেক্ট্রোড

ওয়েন্ডিং জোড়ার প্রকার ভেদ (Types of Welding Joints)

যে ধাতুকে ওয়েল্ড করা হচ্ছে তার পুরুত্ব, গুণাগুণ এবং কোন কাজে জোড়াটি ব্যবহৃত হবে তার উপর ভিত্তি করে জোড়া নির্বাচন করতে হয়।

ওয়েল্ড জোড়সমূহের শ্রেণি বিন্যাস

ওয়েল্ডিং এর প্রধান প্রধান জোড়াগুলিকে নিম্নলিখিত ভাগে ভাগ করা যায়-
বাট জোড়া (Butt Joint)
বাটজোড়াঃ একই সমতলে রেখে দু'টি পাত বা যন্ত্রাংশের ফেস (Face) এ ওয়েল্ডিং করা হয়। পার্শ্বদেশ প্রস্তুতি অনুসারে এদের নাম বিভিন্ন হয়।

বাট জোড়া পাঁচ প্রকার যথা-
(ক) স্কয়ার এজ বাট জোড়া (Square Edge Butt Joint
(খ) ) সিঙ্গেল ভী বাট জোড়া (Single V Butt Joint)
(গ) ডবল ভী বাট জোড়া (Double V Butt Joint)
(ঘ) সিঙ্গেল ইউ বাট জোড়া ( Single U Butt Joint)
(ঙ) ডবল ইউ বাট জোড়া (Double U Butt Joint)

বাট জোড়া সমূহের বর্ণনা এবং প্রয়োগ

(ক) স্কয়ার এজ বাট জোড়া কোনরূপ পার্শ্বদেশ প্রস্তুতি ছাড়া দুটি প্লেটকে জোড়া দেওয়া হয়। ১.৬ মিলিমিটার পুরু হতে ৬ মিলিমিটার পুরু পর্যন্ত পাতলা সিট এ পদ্ধতিতে ওয়েল্ডিং করা যায়।

(খ) সিঙ্গেল ভী বাট জোড়া: ৬ মিলিমিটারের বেশি কিন্তু ২০ মিলিমিটারের কম পুরুত্বের ধাতুকে ওয়েল্ডিং করতে এ জোড়া ব্যবহার করা উচিত।

(গ) ডাবল ভী বাট জোড়া যেকোন ধরনের বল প্রয়োগ এর ক্ষেত্রে এ জোড়া তৈরি করা চলে। সাধারণত ১৯ হতে ৪৫ মিলিমিটার পুরু ধাতুকে ওয়েল্ডিং করতে এ জোড়া খুবই উপযোগী।

(ঘ) ইউ বাট জোড়া ১২ মিলিমিটার হতে ১৯ মিলিমিটার পর্যন্ত পুরুত্বের ধাতুকে ওয়েল্ড করতে এ জোড়া ব্যবহৃত হয়। বয়লারের প্লেট ওয়েল্ডিং করতে এ ধরনের জোড়া বেশি ব্যবহৃত হয়।

(ঙ) ডাবল ইউ বাট জোড়া: ১৯ মিলিমিটার হতে যে কোন পুরুত্বের ধাতুকে ওয়েল্ড করতে এ জোড়া তৈরি করা হয়। এ জোড়া বয়লার বা প্রেসারডেসেল ওয়েল্ডিং করতে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ যেখানে জোড়াকে অধিক বল প্রতিরোধ করতে হবে, সেখানে এ ধরনের জোড়া ব্যবহার করা যাবে।

ওয়েল্ডিং এর বিভিন্ন প্রকার জোড়ার - types of welding joints - ওয়েল্ডিং ইলেক্ট্রোড

ল্যাপ জয়েন্ট (Lap Joint)

ল্যাপ জোড়া: একটি পাতের উপর আর একটি পাত রেখে এ জোড়া তৈরি করা হয়। পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির কোন পরিশ্রম এ জোড় তৈরির জন্য করতে হয় না।

ল্যাপ ঘোড়ার শ্রেণিবিভা ল্যাপ জোড়া দুই প্রকার। যথা-
১. সিঙ্গেল ফিলেট ল্যাপ জোড়া (Single Fillet Lap Joint)
২. ডাবল ফিলেট ল্যাপ জোড়া (Double Fillet Lap Joint)

ল্যাপ জোড়া, 'টি' জোড়া ও কর্ণার জোড়া সমূহের বর্ণনা এবং প্রয়োগ
(ক) সিঙ্গেল ফিলেট ল্যাগ জোড়া: ১২ মিলিমিটার পর্যন্ত পুরুত্বের পাত সফলভাবে এ জোড়া দেওয়া যায়।
(খ) ডাবল ফিলেট ল্যান্স ছোড়া সিঙ্গেল ফিলেটের চেয়ে বেশি বা বহন করতে পারে।
(গ) টি জোড়া: একটি পাতের উপর আর একটি পাত ১০ ডিগ্রি বরাবর স্থাপন করে এ জোড়া তৈরি করা হয়। ১২ মিলিমিটার পুরুত্বের ধাতুতে অত্যন্ত সুন্দরভাবে এ জোড়া দেওয়া যায়। এ ধরনের ঘোড়ার যদি শুধু একদিকে ওরেও করা হয়, তবে সেই জোড়া বেন্ডিং বল প্রতিরোধ করতে পারে না। তবে যদি উভয় দিকে ওয়েন্ড করা যায় তবে জোড়া শক্তিশালী হয় এবং মোচড় ও বেন্ডিং বল প্রতিরোধ করতে পারে। ২৪ মিলিমিটার এর মত গুরুত্বের পাভের 'টি' জোড়া তৈরি করতে হলে ডবল ভী 'টি' জোড় তৈরি করতে হয়।

(ঘ) কর্ণার জোড়াঃ সাধারণত পাতলা শীট মেটালকে জোড়া দিতে এ জোড়া ব্যবহৃত হয়। ১২ পর্যন্ত গেঞ্জি শীট কর্ণার জোড়া তৈরি করার উপযোগী, তবে এ জোড়া বেন্ডিং বল খুব কম প্রতিরোধ করতে পারে। 

(ঙ) এঙ্গ জোড়াও ৬ মিলিমিটার বা তার চেয়ে কম গুরুত্বের ধাতুকে ওয়েল্ডিং করতে এ জোড়া উপযোগী। এ জোড়ার পেনিট্রেশন খুব ভাল হয় না; তাই ঘোড়ার শক্তিও কম হয়।

ওয়েন্ডিং জোড়ের প্রান্তের প্রস্তুতি

বিভিন্ন ওয়েল্ড এর প্রাডের বিভেল কোণ (Bevel angle) নিম্নরূপ হয়ে থাকে- 

V- Preparation for SMAW on MS Plates 30° to 35°
U- Preparation for SMAW on MS Plates 80 to 120
V - Single bevel- 500
J-Preparation 10° to 20°

ফিলেট জোড়া
ফিলেট গুরেখা এর বিভিন্ন অংশের নাম
ওয়েন্ডিং জোড়াগুলোর মধ্যে ফিলেট জোড়া একটি শক্তিশালী ঘোড়া। এটি প্রকৌশল ক্ষেত্রে ফেব্রিকেশন ও জোড়া দেওয়ার কাজের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়। ফিলেট জোড়ার বিভিন্ন অংশ যথা রুট, টো, দেশ ইত্যাদি সঠিকভাবে তৈরি করলে এটি অবশ্যই দৃঢ় হবে।

ওয়েল্ডিং এর বিভিন্ন প্রকার জোড়ার - types of welding joints - ওয়েল্ডিং ইলেক্ট্রোড

ফিলেট ওয়েল্ড এর বিভিন্ন অংশ

ফন্ট (Root) : উশা এবং অনুভূমিক প্লেটারের মিলনস্থল এবং যেখান হতে ওয়েল্ডিং আর হয়, সেটাই রুট।
• টো (Too) যে চূড়ান্ত বিন্দুতে ওয়েল্ডিং সম্পন্ন হয় সেটা টো।
• (Leg Length) : ফিলেট ওরেন্ড এর রুট হতে টো পর্যন্ত দূরত্বকেই লেগ লেখে বলে।
• ছোট থিকনেস (Throat Thickness) : রুট হতে টো ঘরের মধ্যবর্তী বিন্দু পর্যন্ত লম্ব দূরত্বকেই ম্রোট কিনেন বলে।

দৃঢ় ফিলেট ওরেন্ড তৈরির কৌশল

দৃঢ় ফিলেট ওয়েন্ড তৈরি করতে হলে নিদ্রের বিষয়গুলোর প্রতি যত্নবান হতে হবে-
  • প্রস্ততি সাধারণত তেমন কোন প্রস্তুতির প্রয়োজন হয় না তবে ওয়েও এলাকা পরিষ্কার এবং প্লেটের স্পর্শক তলদ্বয় মসৃণ হতে হবে। পেটের গুরুত্বের ভিত্তিতে নিজেল কিংবা ডাকল বিভেল প্রস্তুত করতে
  • পেনিট্রেশন (Penetration)। যেহেতু সব জোড়েই যথাকথ পেনিট্রেশন অত্যাবশ্যক সেহেতু ফিলেট ওয়েন্ডের বেলায়ও তা প্রযোজ্য। সুতরাং এ ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে হবে।

ছোট থিকনেস
এটি রুট হতে ফেসের কেন্দ্র পর্যন্ত দূরত্বের পরিমাণ। মিটার ফিলেট কিংবা স্বাভাবিক ফিলেটের ফেসপ্লেট তলের ৪৫° ডিগ্রি কোণ অবস্থান করে (সমান লেগ লেংথ) অন্যান্য ধরনের ওয়েল্ড উত্তাল কিংবা অবতল।

আকৃতি ও কার্যকরী দৈর্ঘ্য

সম্পূর্ণ দৈর্ঘ্য হতে ওয়েল্ড আকৃতির দুই গুণ বাদ দিলে কার্যকরী দৈর্ঘ্য পাওয়া যায়। দৃঢ় ওয়েল্ডিং পেতে হলে পরিমাণ অনুসারে ওয়েল্ড হলো কী না সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।
উদাহরণ: একটি ওয়েল্ড ৪০০ মিমি. লম্বা এবং ১২ মিমি. ফিলেট। তাহলে, কার্যকরী দৈর্ঘ্য ৪০০-(১২x২) = ৩৭৬ মিমি হবে। ওয়েন্ডের শুরুতে এবং ক্রেটারের প্রান্তে পেনিট্রেশন হওয়ার দরুন এ অ্যালাউন্স দেওয়া হয়।

আকার ও সাধারণ প্রয়োজনীয়তা

ওয়েল্ডের কার্যকারী এলাকা (বর্গ মিমি) এ = ছোট থিকনেস (মিমি) X কার্যকরী দৈর্ঘ্য (মিমি) ।
উদাহরণ: একটা জোড়ের প্লেট থিকনেস ৪ মিমি এবং কার্যকরী দৈর্ঘ্য ২০ মিমি। অতএব, এর কার্যকরী এলাকা =৪ ×২০=৮০ বর্গ মিমি।

বেসিক ওয়েল্ড পজিশন (Basic Weld Positions)

আমেরিকান সোসাইটি অব মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (ASME) এবং আমেরিকান ওয়েল্ডিং সোসাইটি (AWS) ও রন্ডিং জোড়ার ওয়েল্ড মেটালের আকৃতি অনুযায়ী ওরেল্ডকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। - F = ফিলেট ওয়েল্ড (Fillet Weld) এবং G = ন্ড (Groove Weld) ৪.৮.১ ফিলেট ওয়েন্সঃ ত্রিকোণাকৃতি গ্রন্থচ্ছেদবিশিষ্ট ওয়েল্ডকে ফিলেট ওয়েন্ড বলে।

ফিলেট ওয়েল্ড এর বিভিন্ন অংশ শনাক্তকরণ

ফিলেট ওয়েন্ড এর বিভিন্ন অংশের বর্ণনা
রুটা উন এবং আনুভূমিক প্লেটঘরের মিলনস্থল এবং যেখান হতে ওয়েল্ডিং আরম্ভ হ, সেটাই রুট।টো যে চূড়ান্ত বিন্দুতে ওয়েন্ডিং সম্পন্ন হয় সেটা টো। লেগ লেখে ফিলেট ওয়েন্ড এর রুট হতে টো পর্যন্ত দুরত্বকেই বলে লেগ লেখে। ছোট থিকনেস। রুট যতে টো দ্বয়ের মধ্যবর্তী বিন্দু পর্যন্ত শখ দূরত্বকেই ছোট থিকনেস বলে।

Groove
ওয়েল্ডিং জোড়া প্রভূত করতে যদি বিভিন্ন আকৃতির গ্রুন্ড করতে হয় যেমন:- সিংগেল- 'ডি' (Single 'V' ), ডাবল 'ভি' (Double 'V'), সিংগেল 'জে' (Single 'J'), ডাবল 'জে' (Double 'J'), সিংগেল বিভে (Single bevel), ভাৰল বিভেল (Double bevel), ইত্যাদি তখন তাকে এন্ড ওয়েল্ড বলে।

ফিলেটের জন্য ওয়েন্ডিং পজিশন
আমেরিকান সোসাইটি অব মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (ASMB) এবং আমেরিকান ওয়েল্ডিং সোসাইটি (AWS) ওয়েন্ডিং পজিশনগুলোকে সংখ্যা ও বর্ণ একত্রিত করে প্রকাশ করে, যেমন- 1F, 1G, 2F 2G ইত্যাদি।
এখানে, সংখ্যা দিয়ে ওয়েল্ডিং পজিশন এবং বর্ণ দিয়ে ওয়েল্ড এর আকৃতি, প্রকৃতি এবং জোড়ার প্রকৃতির ধরনকে নির্দেশ করে। যেমন-
ফিলেট ওরেও সাধারণত চারটি অবস্থানে ওয়েভিং করা যায়। যথা-
IF - সমতল অবস্থানে (Flat position)
2F - অনুভূমিক অবস্থানে (Horizontal position)
3F উল্লখ অবস্থানে (Vertical position)
4F = ওভারহেড অবস্থানে (Overhead Position) অর্থাৎ জবের তলদেশে জোড়া দেওয়া

শিল্ডেড মেটাল আর্ক
অনুরুপ ভাবে, এন্ড বা বিভেল আকৃতির শুরেও চারটি অবস্থানে ওয়েল্ডিং করা যায়। যথা-
1G = সমতল অবস্থাनে (Flat position)
2G = অনুভূমিক অবস্থানে (Horizontal position)
3G = উল্লম্ব অবস্থানে (Vertical position)
4G = ওভারহেড অবস্থানে (Overhead position) অর্থাৎ জবের তলদেশে জোড়া দেওয়া

পাইপের ক্ষেত্রে ওয়েন্ডিং পজিশন

পাইপ এর ক্ষেত্রে নিখুঁত জোড়ার গুরুত্ব সর্বাধিক। কারণ, পাইপের মাধ্যমে জ্বালানী গ্যাস, জ্বালানী তেল ও রাসায়নিক পদার্থ উচ্চ চাপে পরিবহন বা সঞ্চালন করা হয়। তাই এক্ষেত্রে অধিক নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তার জন্য ত্রুটিযুক্ত ওয়েন্ডিং জোড়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে পাইপের জোড়া ওয়েল্ডিং করতে ওয়েল্ডারের অধিক দক্ষতার প্রয়োজন হয়। তবে পাইপের ওয়েন্ডিং পজিশন জেনে ওয়েল্ডিং অনুশীলন করলে দ্রুত দক্ষতা অর্জন সম্ভব। 3 জি ও 4 জি অবস্থানে পাইপ ওয়েন্ডিং করার প্রয়োজন পড়ে না। সাধারণত পাইপ ওয়েল্ডিং এ এন্ড ওয়েন্ড হয় তবে বিশেষ ক্ষেত্রে ফিলেট ওয়েল্ড করার দরকার পড়ে।

পাইপের ওয়েন্ডিং পজিশন

১জি - অনুভূমিক পাইপের অবস্থান (Horizontal pipe position):
যখন পাইপটি ধারাবাহিকভাবে ঘুরানো হয় যাতে পাইপের অবস্থান অনুভূমিক থাকে এবং 0 থেকে 15° এর মধ্যে রেখে ওয়েন্ডিং সম্পাদিত হয়।

২জি - উপর পাইপের অবস্থান (Vertical pipe position);
পাইপটি উদ্ম অবস্থানে থাকে, ওয়েল্ডারকে পাইপের চারিদিকে ঘুরে অনুভূমিক অবস্থানে থেকে ওয়েন্ডিং করতে হয়। জি- অনুভূমিক পাইপের অবস্থান (পাইল কিভান) (Herimental pipe position, fixed পাইল অনুভূমিকের সাথে সমাজ কে এবং তারকে পাইপের চারিদিকে অবস্থানে থেকে ভয়েজ করতে হয়। ধ্বনি- ৪৫- চালু অবস্থানে পাইপ (পাইপ ডি) (45° Inclined pipe position, fixed): Be চালু অবস্থানে পাইপ ফিক্সড রেখে ওয়েন্ডিং করতে হয়। ৬ জি আর 45° চালু অবস্থানে পাইপে রিং ওয়েন্ডিং ( 45° Inclined pipe position - with a Restriction Ring (fixed): 45 ঢালু অবস্থানে পাইপ ফিক্সড রেখে পাইপে বিভেল করে রিং স্থাপন করে ওয়েল্ডিং করতে হয়।

ইলেকট্রোড নির্বাচন
ইলেকট্রোড বলতে কোনো সুবিধাজনক দন্ড বা শলাকাকে বুঝায় যা ইলেকট্রোড হোল্ডার হতে কার্যবস্তু পর্যন্ত ইলেকট্রিক চার্জ বহন করে এবং প্রয়োজনীয় আর্ক সৃষ্টি করে । এ ছাড়াও প্রয়োজনবোধে নিজে গলে জোড়া স্থানে পরিপূরক ধাতু সরবরাহ করে।

ইলেকট্রোডের প্রকারভেদ
আর্ক ওয়েল্ডিং এ ব্যবহৃত ইলেকট্রোডকে সাধারণত ৪ (চার) ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
কার্বন ইলেকট্রোড
• টাংস্টেন ইলেকট্রোড
• বেয়ার ইলেকট্রোড
• কোটেড ইলেকট্রোড

১) কার্বন ইলেকট্রোড (Carbon Electrode)
কার্বন আর্ক ওয়েল্ডিং পদ্ধতিতে এ ইলেকট্রোড ব্যবহৃত হয়। ইলেকট্রোড ও কার্যবস্তুর মধ্যে আর্ক সৃষ্টি করে ও জোড়াস্থানে পরিপূরক ধাতু (Filler Metal ) যুক্ত করে ওয়েন্ডিং করা হয়।

২) টাংস্টেন ইলেকট্রোড (Tungsten Electrode)
টিগ ওয়েল্ডিং পদ্ধতিতে এ ইলেকট্রোড ব্যবহার করা হয়। এখানেও ইলেকট্রোড ও কার্যবস্তুর মধ্যে আর্ক সৃষ্টিনকরে ও জোড়াস্থানে পরিপূরক ধাতু যুক্ত করে ওয়েল্ডিং করা হয়। টাংষ্টেন ইলেকট্রোড তিন প্রকার। যথা-
• বিশুদ্ধ টাংস্টেন ইলেকট্রোড
• থোরিয়েটেড টাংষ্টেন ইলেকট্রোড
• জিরকোনিয়েটেড টাংস্টেন ইলেকট্রোড

৩) বেয়ার ইলেকট্রোড (Bare Electrode)
আর্ক ওয়েল্ডিং পদ্ধতিতে এ ইলেকট্রোড ব্যবহার করা হয়। এ পদ্ধতিতে নিষ্ক্রিয় গ্যাস ওয়েল্ড মেটালকে ঢেকে রাখে যাতে বায়ুস্থিত অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন শোষণ করতে না পারে।

৪) কোটেড ইলেকট্রোড (Coated Electrode)
SMAW পদ্ধতিতে এ ইলেকট্রোড ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন প্রকার ওয়েল্ডিং এর সুবিধার জন্য বিভিন্ন প্রকারের কোটেড ইলেকট্রোড তৈরি হয়। প্রধান প্রধান কোটেড বা আবরণযুক্ত ইলেকট্রোড সমূহ নিম্নরূপ-
• মাইন্ড ষ্টীল ইলেকট্রোড
• ষ্টেইনলেস ষ্টীল ইলেকট্রোড
• এ্যালুমিনিয়াম ইলেকট্রোড
ফসফরাস ব্রোঞ্জ ইলেকটোড
• নিকেল এ্যালয় ইলেকট্রোড
• শক্ততল প্রস্তুতের জন্য ইলেকট্রোড
এভাবে সকল শ্রেণির ইলেকট্রোডকে প্রধানত দুভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
(Consumable)
(Non Consumable)

ইলেকট্রোড শনাক্তকরণ পদ্ধতি

ইলেকট্রোভগুলোকে বিভিন্ন কোম্পানী তাদের নিজস্ব নাম ও কোড নাম্বারে বাজারজাত করে। ইলেকট্রোড এর প্যাকেটের উপর বিস্তারিত বিবরণ থাকে। এজন্য ইলেকট্রোড ব্যবহারের পূর্বে প্যাকেটের উপরের তথ্যাি ভালভাবে পড়ে নিতে হয়। শিল্পে আমেরিকান ধরেন্ডিং সোসাইটির একটি নমুনা কোড নম্বর প্রদত্ত হলো।
প্রথম অক্ষর
প্রথম অংক
দ্বিতীয় অংক
তৃতীয় অংক

ইলেকট্রোঙ্ক শনাক্তকরণ পদ্ধতি

প্রথম অক্ষর (E) দ্বারা লিন্ডেড মেটাল ডার্ক ওয়েন্ডিং ইলেকট্রোভ বোঝায়।
প্রথম অকে দুটি সংখ্যা থাকে, এ সংখ্যা দুটি দ্বারা নূন্যতম টানা শক্তি বোঝায় যা হাজারে হবে। অর্থাৎ ৬০ থাকলে ৬০,০০০ লিজাই হবে।
দ্বিতীয় অংক যারা ওয়েন্ডিং পজিশন বোঝায়। অর্থাৎ কোন পজিশনে এ ইলেকট্রোড ব্যবহার করা হবে।
এ সংখ্যাটি ১ হতে ৩ পর্যন্ত হয়।
১- যারা সফল পজিশন।
২- দ্বারা অনুভূমিক এবং ফ্লাট পজিশন। এ দ্বারা শুধু ফ্লাট পজিশন বুঝায়।
তৃতীয় অংক দ্বারা বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকার, কোন পোলারিটি ব্যবহার করা হবে, ইলেকট্রোভ আবরণের প্রকারভেদ এবং অনেক সময় গুরেন্ড কোয়ালিটি ও পেনিট্রেশনের পরিমাণ ও বুঝায়।

ওয়েল্ডিং এর দোষত্রুটি ও তার প্রতিকার
ওয়েল্ডিং জোড়েনা সকল প্রকার ত্রুটিসমূহকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
• বাহ্যিক ত্রুটি (External Defects)
• অভ্যন্তরীণ ত্রুটি (Internal Defects)

বাহ্যিক জী (External Defects)
জোড়ের উপরিতলে দৃশ্যমান যে কোন ত্রুটিকে বলা হয় বাহ্যিক ত্রুটি। যেমন, স্প্যার্টার, আন্ডারকাট, বিকৃতি, ওয়েল্ড ভলের ছিদ্রময়তা, ক্রেটার, ওরেন্ড তলের দৃশ্যমান ফাটল, প্লাগ-হোল, ওভার শ্যাপ, উত্তল আকৃতি,অবতল আকৃতি ইত্যাদি।

অভ্যন্তরীণ রুটি (Internal Defects)
জোড়ের ভিতরে অদৃশ্য ত্রুটিকে অভ্যন্তরীণ ত্রুটি বলা হয়। যেমন- স্লাগ ইনক্লুশন, গ্যাল পকেট, অভ্যন্তরীণ ফাটল, কম গলন ও কম পেনিট্রেশন।

কাজের ধারা
১. নিরাপত্তামূলক পোশাক পরিধান করে কাজে মানোনিবেশ করো।
২. মাপ অনুযায়ী কার্যা কেটে নাও ।
৩. স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজের জন্য জব প্রস্তুত করো।
৪. স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী ইলেকট্রোড নির্বাচন করো।
৫. ইলেকট্রোড হোল্ডারের সাথে সংযোগ করো।
৬.হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে খাড়া অবস্থান হতে ২-৫° কোণে হেলিয়ে দাও, যাতে একটি রান সম্পন্ন করার পর খাড়া প্লেটটি ১০° কোণে ফিরে আসে।
৭.সমতল অবস্থানে (১এফ) পজিশনে ওয়েল্ডিং টেবিলে জবটি সেট করো।
৮. রুট পাস/রুট রান (Root pass) টানার সময় রুটের সাথে ইলেকট্রোডকে ৮০° কোণে এবং জবের দুই পৃষ্টদেশ হতে ইলেকট্রোডকে ৪৫" কোপে ধর।
৯. রুট পাস/রুট রান টানার পর বিডের উপর হতে চিফিং ব্যামার ও ওয়্যার ব্রাশের সাহায্যে ভালভাবে পরিষ্কার করো।
১০. খানিকটা কারেন্ট বাড়িয়ে হট রান / পাস (Hot pass) সম্পন্ন করো (কারেন্ট বাড়াবার ফলে জোড়ে কোন ত্রুটি থাকলে ঠিক হয়ে যাবে।
১১. খানিকটা বুনন কৌশলে ইলেকট্রোডের মাথাকে দুলিয়ে ফিলিং রান / পাস (Filling pass) টান।
১২. ক্যাপিং রান/পাস (Caping pass) বা ফিনিসিং রান বা শেষ রান টানার সময় বিডের দুই প্রান্তে বুনন কৌশল অবলম্বন করো। ইলেকট্রোড চালনার সময় জোড়ে ও মাঝে অপেক্ষা না করে জোড়ের প্রান্তে সামান্য অপেক্ষা করে বিড টান।
১৩. চিপিং হ্যামার ও ওয়্যার ব্রাশের সাহায্যে জোড়স্থান ভালভাবে পরিষ্কার করো।
১৪. বাহ্যিক ত্রুটিগুলো শনাক্ত করে ত্রুটির কারণ অনুসন্ধান করো এবং প্রতিকার করো।
১৫. সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি নির্ধারিত স্থানে সংরক্ষণ করো।
১৬. কাজ শেষে কর্মস্থল পরিষ্কার করো।

কাজের ধারা -২
১. প্লেট দুটিকে তৈল, যথাযথভাবে পরিষ্কার করো।
২. প্লেটের ধারালো প্রায় ফাইল ঘষে মসৃণ করো।
৩. যে কোন একটি প্লেটের মাঝ ফরারৰ কা‍ইবার দ্বারা সাল টান।
৪. অতি দাগের উপর একটি প্লেটের মাঝখানে অন্য প্লেট রেখে ট্যাক সম্পন্ন কর।
৫. টিতে উ (Vertical) অবস্থানে (৩এফ) সেট করো।
৬. ডিসি ওয়েন্ডিং মেশিন ব্যবহার করো।
৭. ইলেকট্রোড (-) এবং জব (+) অথাৎ গ্রেইটপোলারিটি ব্যবরার করো।
৮. বিকৃতি রোধের জন্য প্লেটের ওয়েন্ডেও পার্শ্বে ৯২ থেকে ৯৩ বেশি রাখ।
৯. ফুট রানের সময় ৩.১৩ মিমি ব্যাসের ইলেকট্রোডের জন্য ১১০ এম্পিয়ার কারেন্ট সেট করো ।
১০. ওরেল্ড লাইনের সাথে ইলেকট্রোড ৮০ থেকে ৯০ এবং উভয় পার্শ্বের প্লেটের সাথে ৪৫° কোণে ধর।
১১. আরম্ভ স্থালের একটু উপর আর্ক সৃষ্টি করে আবার দ্রুত আরম্ভ স্থানে নিয়ে আস এবং মূল ধাতু গলা পর্যন্ত অপেক্ষা করো।
১২. মূল ধাতু বা কোণের মধ্যে যথেষ্ট অনুপ্রবেশ (পেনিট্রেশন) ঠিক রেখে সোচ্ছা ভাবে অগ্রসর হও।
১৩. রুট রানের পরে ওয়েল্ড মেটাল ভালোভাবে পরিষ্কার করো। কোন ধরনের ত্যাগ থাকলে পরের রান ত্রুটিযুক্ত হবে।
১৪. দ্বিতীয় রানে কারেন্ট ১৫০ অম্পিয়ারের বেশি সাও, কারণ রুট রানে ত্রুটি থাকলে ঠিক হয়ে যাবে।
১৫. দ্বিতীয় রানে ওয়েল্ড লাইনের সাথে ইলেকট্রোড ১৫ থেকে ১০৫" এবং সাইট প্লেটের সাথে ৫৫ কোণে ধরে বুনন কৌশলে একই গতিতে ইলেকট্রোড চালনা করো।
১৬. তৃতীয় রানে ওয়েল্ড লাইনের সাথে ইলেকট্রোড ৭০ থেকে ৮০ এবং উভয় প্লেটের সাথে ৪০° থেকে ৫০ কোণে ধরে বুনন কৌশলে একই গতিতে ইলেকট্রোড চালনা করো।
১৭. বুনন কৌশলে ওয়েন্ডিং সম্পন্ন করো।
১৮. প্লেটের শেষ প্রান্তে এসে রান টানা বন্ধ করো।
১৯. আত্মবিশ্বাস এবং একাগ্রতার সাথে কাজ শেষ করো।
২০. তারের ব্রাশ দিয়ে বীড পরিষ্কার করো।
২১. বাহ্যিক ত্রুটিগুলো সনাক্ত করে, ত্রুটির কারণ শনাক্ত করে ত্রুটিযুক্ত করো ।
২২. সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি নির্ধারিত স্থানে সংরক্ষণ করো।
২৩. কাজ শেষে কর্মস্থল পরিষ্কার করো।
২৪. স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজের জন্য জব প্রস্তুত করো।
২৫. ফাইলিং অথবা গ্রাইন্ডিং করে ৩০° বিভেল এঙ্গেল তৈরি করো
২৬. ফাইলিং রুটকেস ১.৫ হতে ২ মিলিমিটার পুরুত্ব বাহির করো ।
২৭. জোড়াটিকে এমনভাবে স্থাপন করো যেন এদের উপরের অংশে একটি 'ডি' তৈরি হয় এবং এদের মাঝে রুট গ্যাপ ১.৫ হতে ২ মিলিমিটার পর্যন্ত করো।
২৮. স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী ইলেকট্রোড নির্বাচন করো।
২৯. ইলেকট্রোড হোল্ডারের সাথে সংযোগ করো।
৩০. ওয়েল্ডিং মেশিনে কারেন্ট সেট করো
৩১. ভাবের দুই পার্শ্বে দুটি ট্যাক ওয়েল্ড করো।
৩২. জবটি ওয়েল্ডিং টেবিলের পজিশনারের সাথে দেহের উচ্চতা বিবেচনাসহ আরামদায়ক অবস্থানে আটকাও।
৩৩. রুট পাস/রুট রান (Root pass) টানার সময় রুটের সাথে ইলেকট্রোডকে ৮০ হতে ৯০° কোণে ধরব এবং জবের দুই পৃষ্টদেশ হতে ইলেকট্রোডকে ৪৫ কোণে ধরবো।
৩৪. রুট পাস/ফুট রান টানার পর বিডের উপর হতে চিপিং হ্যামার ও ওয়্যার ব্রাশের সাহায্যে জোড় স্থান ভালভাবে পরিষ্কার করো।

৩৫. খানিকটা কারেন্ট বাড়িয়ে হট রান / পাল (Hot pass) সম্পন্ন করো। (কারেন্ট বাড়াবার ফলে জোড়ে কোন ত্রুটি থাকলে সেরে যাবে।
৩৬.ইলেকট্রোড এবং প্লেটের মধ্যে বিভিন্ন কোণ অনুসরণপূর্বক ফিলিং রান/পাস (Filling pass) ক্যাপিং রান/পাস (Caping pass) বা ফিনিসিং রান টানব এবং ইলেকট্রোড চালনার সময় জোড়ের মাঝে অপেক্ষা না করে জোড়ের প্রান্তে সামান্য অপেক্ষা করে বিড টান।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url